বছর না ঘুরতেই পথশ্রী প্রকল্পে নির্মিত রাস্তা ভাঙলো বলরামপুরে.নামশোল থেকে রাইমল যাওয়ার রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।
বছর না ঘুরতেই পথশ্রী প্রকল্পে তৈরি রাস্তায় ফাটল ধরার অভিযোগ উঠল জঙ্গলমহলের বলরামপুরে। স্থানীয়েরা জানান, বড়উরমা পঞ্চায়েতের নামশোল থেকে রাইমল বড় ময়দান পর্যন্ত দেড় কিলোমিটারের কাঁচা রাস্তা পথশ্রী প্রকল্পে তৈরি হয়েছে সম্প্রতি। ৫৩,২২,১৬৪ টাকা বরাদ্দে চলতি বছরের মার্চের শেষে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় মে-র তৃতীয় সপ্তাহে।
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, ছ’মাস পার হতে না হতে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরতে শুরু করে। ভারী যানবাহন গেলে ফাটল ধরা অংশ থেকে কংক্রিটের টুকরো উঠে যাচ্ছে। তাঁদের আক্ষেপ, রাস্তাটি প্রশাসনের খাতায় পাকা রাস্তা হিসাবে নথিভুক্ত থাকবে। অথচ, নির্মাণের পরে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রাস্তাটি যে ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে, সে খবর হয়তো পৌঁছবে না।
বলরামপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি নারায়ণ মাহাতোর দাবি, ‘‘রাস্তাটি তৈরির সময়ে স্থানীয়েরা কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সে খবর প্রশাসনের কাছে পৌঁছেছিল। ছ’মাস পার হতে না হতেই রাস্তা ফেটে গিয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। মাস দু’য়েকের মধ্যেই হয়তো রাস্তাটি আগের অবস্থায় পৌঁছে যাবে।’’
ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তথা দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ দাসগোস্বামী বলেন, ‘‘রাস্তার নির্মাণকাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ পাওয়ার পরে আমরা রাস্তা পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়দের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। গোটা বিষয়টি বিডিও-র নজরে আনা হয়েছে।’’
সূত্রের খবর, সুভাষের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির আরও কয়েক জন কর্মাধ্যক্ষ রাস্তা পরিদর্শনে যান। কাজের মান দেখে তাঁরাও অসন্তুষ্ট। নির্মাণে গাফিলতি নিয়ে বিডিও-কে চিঠি লিখেছেন সুভাষ। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশও করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা ব্লক প্রশাসনের কাজ। ঘটনায় প্রশাসনের ভাবমূর্তি যে ক্ষুণ্ণ হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।”
জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তাটি নিয়ে আমাদের কাছেও স্থানীয়দের তরফে অভিযোগ এসেছে। বিডিও-কে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। এমন আরও অভিযোগ আসছে। তা-ও দেখা হবে।’’
বিডিও (বলরামপুর) সৌগত চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাস্তার কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থাকে শো-কজ় করা হয়েছে।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘দায়িত্বে থাকা বাস্তুকারকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।’’