এলাকায় দাবি এনআইএ তদন্তের

ছ’দিন আগে মল্লারপুরে জনবহুল বসতির একটি ক্লাবঘরে বিস্ফোরণ নিয়ে এখন এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মল্লারপুর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০০:২৬
Share:

গণদাবি: শহরের নিরাপত্তা, বিস্ফোরণ-কাণ্ডে এনআইএ তদন্তের দাবিতে দোকানপাট বন্ধ রেখে মিছিলে শামিল হন ব্যবসায়ীরাও।

মল্লারপুরের ক্লাবে বিস্ফোরণ-কাণ্ড নিয়ে এনআইএ তদন্তের দাবি তুললেন এলাকাবাসীর একাংশ। যদিও পুলিশের বক্তব্য, ওই ঘটনায় তাদের তদন্ত প্রায় শেষের মুখে।

Advertisement

ছ’দিন আগে মল্লারপুরে জনবহুল বসতির একটি ক্লাবঘরে বিস্ফোরণ নিয়ে এখন এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ঘটনার জেরে স্থানীয় থানার অফিসার ইন-চার্জের অপসারণ বা ফরেন্সিক দলের তদন্তেও ভরসা পাচ্ছেন না এলাকার অনেকে। মল্লারপুরে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ক্লাবঘরে বিস্ফোরণ-কাণ্ড নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবিতে এলাকার সমস্ত ক্লাবের সদস্য, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা শুক্রবার পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন। ওই দাবির সমর্থনে এ দিন আট থেকে আশির মানুষ এনআইএ তদন্ত চেয়ে প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাঁটলেন শান্তি মিছিলে। তাতে শামিল হন মল্লারপুর, আম্বা, বাহিনা, ফতেপুরের বাসিন্দারা।

এ দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ব্যবসা বন্ধ রেখে ওই মিছিলে পা মেলান ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় থানার মাধ্যমে ওই সব দাবির কথা জেলা পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের দফতরে পাঠান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মল্লারপুরে বছর দু’য়েক আগে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জটিল হয়। তার পরে মল্লারপুর বাজার এলাকা থেকে জাতীয় সড়ক, আম্বা মোড়, বাহিনা মোড় থেকে রেলগেট, রেলগেট থেকে রেলস্টেশন যাওয়ার রাস্তা, স্কুল মোড়ের মতো এলাকায় সিসিটিভি বসানো হয়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, মল্লারপুরে পঞ্চাশটির বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও, এখন কাজ করে মাত্র ৭-৮টি ক্যামেরা। তাঁরা জানান, বিস্ফোরণের ‘উৎস’ ওই ক্লাব থেকে ৫০ মিটার দূরে, মসজিদের কাছে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও গলির বাঁকের ক্লাবের ছবি তাতে ধরা পড়ত না। এ ছাড়া রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় স্কুল মোড় থেকে রেলগেট যাওয়ার রাস্তায় থাকা ক্যামেরাতেও বাজারের গলির ভিতরে থাকা ওই ক্লাবের ছবি ধরা পড়ে না।

Advertisement

মল্লারপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তাপস দত্ত বলেন, ‘‘ওই ক্লাবের সঙ্গে এলাকার অনেক সামাজিক কাজকর্ম জড়িত ছিল। সেই ক্লাবে বিস্ফোরণ হওয়ায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। আশপাশ এলাকার ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র মল্লারপুর। বিস্ফোরণের পরে থেকেই ব্যবসায় মন্দা নেমেছে। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করুক— এটাই আমরা চাই।’’ তিনি জানান, এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এ দিন দোকানপাট বন্ধ রেখে মিছিলে যোগ দেন। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, মল্লারপুর বাজার, রেলগেট বা বাহিনা মোড় থেকে রেলগেট যাওয়ার রাস্তায় পুলিশের নজরদারি কম। অভিযোগ, সম্প্রতি মল্লারপুর বাজার, বাহিনা মোড়ে মাদকদ্রব্য বিক্রি করা হচ্ছে। মল্লারপুর থানা এলাকার কামরাঘাট থেকে দু’জন মাদক বিক্রেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তার পরেও মল্লারপুরে মাদকের কারবার কমেনি। এ ছাড়াও মল্লারপুর এলাকায় কিছু দিন ধরে মোটরবাইক, অটোরিকশা, গাড়ি চুরির ঘটনাও ঘটে। কয়েক জন এলাকাবাসী জানান, বিস্ফোরণ হওয়া ওই ক্লাবের সদস্যরা সামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন। তেমনই এলাকায় অশান্তি রুখতেও তাঁরা সক্রিয় ছিলেন। মল্লারপুর এলাকার অন্য অনেক ক্লাব ওই ক্লাবের সিদ্ধান্তে মান্যতা দিত।

জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘মল্লারপুরের ক্লাবে বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত প্রায় গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। খুব শীঘ্রই দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement