ফাইল চিত্র।
বগটুই-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত আনারুল হোসেনকে জেলে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করল রামপুরহাট মহকুমা আদালত। আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আনারুলের সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ না করে কেন তাঁকে এত দিন সাধারণ বন্দির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় সিবিআইকে ‘ভর্ৎসনা’ও করেন বিচারক। আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন আনারুলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা। ঘটনাচক্রে, যিনি বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলেরও আইনজীবী।
শুক্রবার বগটুই-কাণ্ডের মামলায় আনারুলের জামিনের আবেদন করেছিলেন অনির্বাণ। তা খারিজ করে দেন বিচারক। এর পরেই আনারুলের আইনজীবী আদালতকে জানান, রাজনৈতিক কর্মী হওয়ার সুবাদে সমাজে তাঁর মক্কেলের অনেক অবদান রয়েছে। নিয়ম মতো, তাঁকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দেওয়া উচিত ছিল। বাস্তবে যা হয়নি। আনারুলকে যাতে প্রথম শ্রেণির বন্দির সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়, তাঁর আবেদন জানান অনির্বাণ।
প্রসঙ্গত, সামাজিক অবদানের বিষয়টি নজরে রেখে জেলে বন্দিদের বিভিন্ন ধরনের মর্যাদা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। আদালতের কাছে অনিবার্ণের অভিযোগ, আনারুলকে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি হিসাবেই তুলে ধরেছে সিবিআই। তা সত্ত্বেও তাঁকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দেওয়া হয়নি। অনির্বাণ বলেন, এই অভিযোগ তোলার পরেই আদালত সিবিআইয়ের কাছে জানতে চায়, আনারুল সত্যিই রাজনৈতিক কর্মী কি না এবং সমাজে তাঁর কী কী অবদান রয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তর সিবিআইয়ের আইনজীবী দিতে না পারায় তাঁকে ‘ভর্ৎসনা’ও করা হয়েছে বলে দাবি করেন অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘‘এর পরেই আনারুলের সামাজিক অবস্থান এবং তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়ে সিবিআইয়ের কাছে রিপোর্ট তলব করেন বিচারক। সিবিআইয়ের রিপোর্টের ভিত্তিতেই আদালত সিদ্ধান্ত নেবে, আমার মক্কেলকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দেওয়া হবে কি না।’’
গত ২১ মার্চ রাতে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ন’জনের মৃত্যুর ঘটনার পর সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়ে আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তারাপীঠ থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন আনারুল। তাঁর বিরুদ্ধে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, খুন, খুনের চেষ্টা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, মারধর, লুটপাট-সহ নানা ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তখন রাজ্যের গঠন করা সিট বগটুই-কাণ্ডের তদন্ত করছিল। ঘটনাচক্রে, আনারুল গ্রেফতার হওয়ার পরেই তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রেফতার হওয়ার পর আনারুল বলেছিলেন, তিনি নির্দোষ। চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। শুক্রবারও শুনানির জন্য আদালত চত্বরে একই কথা বলতে শোনা গেল তাঁকে।