বিদ্ধ: এ ভাবেই মুখের ভিতরে কঞ্চি ঢুকে যায় নূরজাহানের। —নিজস্ব চিত্র
বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় থুতনি দিয়ে চোখের নিচ পর্যন্ত বাঁশের ছিলা ঢুকে গিয়েছিল বছর চারেকের মেয়েটির। মঙ্গলবার দুপুরে। গলগলিয়ে বেরতে থাকে রক্ত। আকস্মিক ওই দুর্ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছিলেন পাইকর থানার কামারখুড় গ্রামে তার পরিজনেরা। ব্যথায় ছটফট করতে থাকা মেয়েকে নিয়ে কী করবেন, প্রথমে ভেবে পাচ্ছিলেন না কেউ-ই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পাইকরে, মুরারই ২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে তাকে ‘রেফার’ করা হয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার শল্য বিভাগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভর্তি করা হয় তাঁকে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বিভাগীয় প্রধান সিদ্ধার্থ বিশ্বাস তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে অস্ত্রোপচার করে শিশুটির চোখের নিচে বিঁধে থাকা বাঁশের ছিলা বের করেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, বিপন্মুক্ত হয়েছে ওই মেয়েটি। সিদ্ধার্থবাবু কথায়, ‘‘খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। লম্বা বাঁশের ছিলা থুঁতনির পাশ দিয়ে গলার ভিতর দিয়ে চোয়াল ভেদ করে ডান চোখের নীচ পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। শিশুটির ডান চোখ খুব জোর বেঁচে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, ৩৫ মিনিটের ওই অস্ত্রোপচারে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী চিকিৎসক এ টি এম শাহিন, সুমন দে, অ্যানাস্থেটিক অরূপ ঘোষ ও অমিত হাজরা শামিল ছিলেন।
অস্ত্রোপচারের পরে নূরজাহান। —নিজস্ব চিত্র
কামারখুড় গ্রামের চার বছরের নূরজাহান খাতুনের মা রুহিদা বিবি বলেন, ‘‘বাড়ির কাজে ব্যস্ত ছিলাম। মেয়ে জেঠুর বাড়িতে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করছিল। ওর হাতে লাঠিটা ভেঙে গিয়ে থুতনি দিয়ে ঢুকে চোখের নিচ পর্যন্ত বিঁধে যায়।’’ রুহিদা বিবির কথায়, ‘‘প্রচণ্ড রক্ত বেরচ্ছিল। ব্যথায় ছটফট করছিল মেয়েটি। বাড়ির অনেকে ঢুকে যাওয়া বাঁশের ছিলা বের করতে চাইছিল। কিন্তু মেয়ের প্রাণ সংশয়ের ভয়ে রাজি হয়নি। পাইকর হাসপাতাল থেকে রামপুরহাটের হাসপাতালে ওকে নিয়ে আসি। ডাক্তারবাবুদের অনেক ধন্যবাদ।’’