প্রতীকী ছবি
‘আনলক ১’ শুরুর পরেই অফিসগুলিতে কর্মীদের উপস্থিতি বাড়ানোর কথা বলেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ডিভিশনের বিভিন্ন এলাকা থেকে কর্মীদের আদ্রার অফিসে আনার কোনও ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ রেলকর্মী সংগঠনগুলির।
‘আনলক ১’ শুরুর আগেই, ৩০ মে এই বিষয়ে আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছিল রেলকর্মী সংগঠন মেনস কংগ্রেস। সম্প্রতি ওই দাবিতে ডিআরএম-এর কাছে চিঠি দিয়েছে রেলকর্মীদের আর একটি সংগঠন মেনস ইউনিয়ন। মেনস কংগ্রেসের নেতা সুব্রত দে ও মেনস ইউনিয়নের নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অন্য ডিভিশনগুলি বাইরের বাসিন্দা রেলকর্মীদের বিভাগীয় সদরের কার্যালয়গুলিতে আনতে শাটল ট্রেন চালাচ্ছে। কিন্তু আদ্রায় সেটা শুরু হয়নি।’’
তবে এমন ট্রেন চালানোর কোনও আশ্বাস মেলেনি ডিআরএম (আদ্রা) নবীন কুমারের থেকে।
‘লকডাউন’ শুরু হওয়ার কিছু পরে, আদ্রার বাসিন্দা রেলকর্মীদের ডিভিশনের অন্য স্টেশনগুলির কর্মস্থলে পাঠানোর জন্য ‘শাটল ট্রেন’ চালানো শুরু করেন রেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকলেও মালগাড়ি চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন স্টেশনে ও রেল লাইনে রক্ষণাবেক্ষণের মতো দৈনন্দিন কিছু কাজকর্ম তো আছেই। তাই আদ্রায় বসবাস করা ওই স্টেশন বা শাখাগুলিতে কর্মরত রেলকর্মীদের পাঠানোর জন্য শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু অন্য এলাকা থেকে আদ্রায় কর্মীরা কী করে আসবেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন সংগঠনগুলির নেতারা।
আদ্রা থেকে কর্মীদের পাঠানোর জন্য ‘শাটল ট্রেন’ চালানো হচ্ছে। আদ্রা-বার্ণপুর শাখায় মধুকুণ্ডা পর্যন্ত, আদ্রা-মেদিনীপুর শাখায় শালবনি পর্যন্ত, আদ্রা-চান্ডিল শাখায় চান্ডিল পর্যন্ত এবং আদ্রা-বোকারো শাখায় বোকারো পর্যন্ত ‘শাটল ট্রেন’ যাচ্ছে। কিন্তু ওই সমস্ত শাখা থেকে আদ্রায় কর্মীদের নিয়ে আসার জন্য কোনও ট্রেন নেই। রেলকর্মীদের সংগঠনগুলির দাবি, ওই চারটি স্টেশন পর্যন্ত কর্মীদের পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি, সে সমস্ত জায়গা থেকে কর্মীদের নিয়ে আসার জন্য সকালে ‘শাটল ট্রেন’ চালাতে হবে।
মেনস ইউনিয়নের নেতা গৌতমবাবু বলেন, ‘‘১ জুন থেকে লকডাউন শিথিল হয়েছে। আরও বেশি কর্মীদের আসতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের বড় অংশ আদ্রায় থাকেন না। ফলে, তাঁদের পক্ষে কর্মস্থলে আসা সম্ভব হচ্ছে না।”
কর্মীর অভাবে রেলের অ্যাকাউন্টস, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগন্যালিং-সহ বিভিন্ন দফতরের কাজকর্ম অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন গৌতমবাবুরা। মেনস কংগ্রেসের নেতা সুব্রতবাবুর দাবি, আদ্রার ডিআরএম অফিসে বাইরে থেকে আসা শতাধিক কর্মীর তালিকা রেল কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন তাঁরা। ওই সমস্ত কর্মীরা মূলত বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, পুরুলিয়া, ভোজুডি, বার্নপুরের মতো এলাকায় থাকেন। কাজে যোগ দিতে বলা হলেও ট্রেন না থাকায় তাঁরা আসতে পারছেন না বলে দাবি সুব্রতবাবুর।
ট্রেনে করে ওই সমস্ত কর্মীদের আনা দাবির সারবত্তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন রেল কর্তৃপক্ষ। ডিআরএম (আদ্রা) নবীন কুমার বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, বিভাগীয় সদরের অফিসে কর্মরত হলে সে কর্মীকে আদ্রাতেই থাকতে হবে। আদ্রায় থাকার জন্য তাঁদের কোয়ার্টার দেওয়া হয়। ফলে, ওই কর্মীরা অন্যত্র থাকলে তাঁদের আদ্রাতে আনার দায়িত্ব রেলের হতে পারে না। কর্মীদের নিজেদের মতো ব্যবস্থা করেই অফিসে আসতে হবে।”
তবে কর্মী সংগঠনের নেতা সুব্রতবাবুদের পাল্টা দাবি, আদ্রাতে রেলের আবাসনের অভাব আছে। তা ছাড়া, পদমর্যাদা অনুযায়ী আবাসন সমস্ত কর্মীরা আদ্রাতে পান না বলেই বাধ্য হয়ে বাইরে থাকেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
সুব্রতবাবুরা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই এটা হয়ে আসছে। রেল সেটা ভালই জানে। তাই ওই কর্মীকে কর্মস্থলে আনার নৈতিক দায়িত্ব রেলের উপরেই বর্তায়।’’