এসডিও অফিসে। নিজস্ব চিত্র
পোস্টারে ‘বিজেপি’ লেখা ছিল। কিন্তু বিজেপি দাবি করেছে, তাদের কোনও যোগ নেই। সে ক্ষেত্রে, কাউন্সিলরদের ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগে পোস্টার কারা সাঁটলেন, সেটা খুঁজে বের করার দাবি নিয়ে মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূল ও সিপিএমের কাউন্সিলররা।
বৃহস্পতিবার রঘুনাথপুর পুরসভার তৃণমূলের সাত জন ও সিপিএমের দু’জন কাউন্সিলর মহকুমাশাসকের (রঘুনাথপুর) অফিসে গিয়ে তদন্তের দাবিতে স্মারকলিপি জমা করেন। মহকুমাশাসক আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর এ দিন অফিসে ছিলেন না। স্মারকলিপি নেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুদেষ্ণা দে মৈত্র। তিনি এই ব্যাপারে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। শুধু বলেছেন, ‘‘মহকুমাশসক ফিরলে বিষয়টি ওঁকে জানানো হবে।”
দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ‘কাটমানি’ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী দেওয়ার পরেই তোলপাড় হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা। আঁচ পড়েছে পুরুলিয়াতেও। সম্প্রতি রঘুনাথপুর শহরের কয়েকটি জায়গায় ‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে পোস্টার পড়েছিল। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নেওয়া ‘কাটমানি’ নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ ছিল, বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য টাকা নিয়েছেন ‘কাউন্সিলরেরা’। তবে কারও নাম উল্লেখ করা ছিল না।
রঘুনাথপুরের ওই পোস্টারের নীচে ‘সৌজন্য: বিজেপি’ লেখা দেখা গিয়েছে। ছাপা ছিল পদ্মফুলের ছবি। তবে সেই সময়েই বিজেপির শহর সভাপতি স্বপ্নেশ দাস জানিয়েছিলেন, পোস্টারের দাবি ও বক্তব্যের সঙ্গে তাঁরা সহমত। কিন্তু পোস্টার তাঁরা দেননি। এ দিন তৃণমূলের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভাকে কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশ্যে কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে। তারা চাইছে শান্ত রঘুনাথপুরকে অশান্ত করতে। আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি পুরসভাগত ভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
তৃণমূল এই ঘটনায় রঘুনাথপুর পুরসভায় পাশে পেয়েছে সিপিএমের দুই কাউন্সিলরকেও। পুরসভায় বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের কাউন্সিলর প্রদীপ দাসের ব্যাখ্যা, ‘‘কাটমানি ফেরত চেয়ে লাগানো পোস্টারে তৃণমূলের নাম উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে ‘কাটমানি’ কান্ডে কাউন্সিলরেরা জড়িত। এতে পুরসভার ভাবমূর্তির যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনই আমাদের দিকেও আঙুল উঠছে। তাই কে বা কারা পোস্টার দিয়ে সিপিএমের কাউন্সিলরদেরও ‘কাটমানি’ কাণ্ডে জড়াতে চাইছে সেটার তদন্ত চাইছি।’’ এ দিন স্মারকলিপি দিতে শামিল হননি কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যাওয়া কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, মৃত্যুঞ্জয়বাবু এই তদন্তের দাবির সঙ্গে ‘সহমত’। মৃত্যুঞ্জয়বাবু নিজে বলছেন, ‘‘কে বা কারা পোস্টার দিয়েছে আমাদের জানা নেই ঠিকই। কিন্তু পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা সবাই কাটমানি নেওয়ার সঙ্গে জড়িত। আমরা চাইছি পোস্টার কারা দিয়েছে সেই বিষয়ের বদলে কারা কাটমানি নিয়েছেন সেই বিষয়ে তদন্ত করুক প্রশাসন।”