‘‘যত্র বিশ্বং ভবত্যেকনীড়ম্” অর্থাৎ বিশ্ব যেখানে মিলেছে একনীড়ে। এই বেদবাক্যটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দেখিয়েছিলেন পণ্ডিত বিধুশেখর শাস্ত্রী। যা পরেবিশ্বভারতীর সঙ্কল্প-বাক্য হিসেবে গৃহীত ও ব্যবহৃত হয়। শান্তিনিকেতনের আশ্রম বিদ্যালয়কে যাঁরা ‘উদারতার’ মন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেনতাঁদের মধ্যে অন্যতম বিধুশেখর।
রবীন্দ্রনাথের ৬৫ তম জন্মদিনে সেই বিধুশেখরের উদ্যোগেই পঞ্চবটী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এই উপলক্ষে একটি শ্লোকও রচনা করেছিলেন বিধুশেখর। ১০০বছর পরে এ বার ফলকেখোদিত হতে চলেছে সেই শ্লোক। পাশাপাশি, এ বার থেকে পঞ্চবটী ঘুরে দেখার সুযোগও পেতে চলেছেনপর্যটকেরা। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের এ উদ্যোগে খুশি আশ্রমিক, প্রাক্তনী, পড়ুয়ারা। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা যায়, ১৩৩২ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ(ইংরেজি ১৯২৫ সাল) জাঁকজমক করে রবীন্দ্রনাথের ৬৫ তম জন্মদিন পালন করা হয়।এই জন্মদিনের বিশেষত্ব ছিলপঞ্চবটী প্রতিষ্ঠা। বিধুশেখরের উদ্যোগে উত্তরায়ণের উত্তর-পশ্চিম অংশে নির্দিষ্ট দূরত্বে কবি রোপণ করেছিলেন অশ্বত্থ, বট, বেল, অশোক ও আমলকী— এই পাঁচটি গাছের চারা। এ বিশেষ দিনেবিধুশেখর লিখেছিলেন—
‘‘পান্থানাং চ পশুনাং চ পক্ষিণাং চ হিতেচ্ছায়া। এষা পঞ্চবটী যত্নাদ্ রবীন্দ্রেণেহ রোপিতা।’’ যার অর্থ পশু,পাখি এবং পথিকদের মঙ্গল কামনায় রবীন্দ্রনাথ যত্ন সহকারে এখানে পঞ্চবটীরোপণ করলেন। উত্তরায়ণের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে এখনও সেই বৃক্ষগুলি রয়েছে। সেখানেই এ বার শ্বেত পাথরের উপরে বিধুশেখরের লেখা শ্লোকটি রোমান, বাংলা, দেবনাগরীতে লিপিতে লেখা থাকবে বলে রবীন্দ্রভবন সূত্রেরখবর। পাশাপাশি, পঞ্চবটী ঘুরে দেখারও সুযোগ পাবেন পর্যটকেরা।
পুরো কাজটি আগামী পঁচিশে বৈশাখের আগেই সম্পূর্ণ করতে আশাবাদী রবীন্দ্রভবন কর্তৃপক্ষ।এ নিয়ে রবীন্দ্রভবনের ডিরেক্টর অমল পাল বলেন, ‘‘পুরনো দিনের মানুষে রা এই পঞ্চবটীর গুরুত্ব জানেন। তাই সকলের সহযোগিতায় এমন একটি কাজ করার সুযোগ পেয়ে সত্যিই আজ বড়ভাল লাগছে। ”