—ফাইল চিত্র।
রয়েছে এক গুচ্ছ প্রকল্প, কিন্তু প্রান্তিক চাষিরা কি তার সুফল পাচ্ছেন? পিএম কিসান নিধি প্রকল্প বাংলায় চালু করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর তরজাকে ঘিরে সরগরমের মধ্যে চাষিদের মৌলিক প্রশ্ন— প্রকল্প চালু করলেই কি সব দায়িত্ব শেষ? তা চাষিদের কাছে পৌঁছল কি না, সেটাও সরকারের দেখা দরকার। তবেই না প্রকল্প সফল হবে।
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর মহকুমার সর্বত্র এবং বাঁকুড়া ও খাতড়া মহকুমার একাংশে সেচের সুবিধা থাকায় বছরভর চাষাবাদ হয়। অনেকেই কয়েক পুরুষ ধরে শুধু চাষাবাদ করে সংসার পালন করছেন। তাই কৃষকদের জন্য চালু নানা প্রকল্পের সুবিধা পেলে, তাঁদের অনেকেই উপকৃত হবেন বলে জানাচ্ছেন।
কোতুলপুরের চককারা গ্রামের প্রান্তিক চাষি সাহেব ঘোষের আক্ষেপ, “রাজ্য সরকারের কৃষকবন্ধু বা কেন্দ্রের পিএম কিসান নিধি যোজনার মতো সরকারি প্রকল্পের কথা সংবাদপত্রে দেখেছি। তবে এ সব প্রকল্প তো কাগজেকলমেই রয়েছে। কখন, কী ভাবে এর উপভোক্তা নির্ণয় হচ্ছে, তা কিছুই জানা যায় না। আমি নিজে অন্তত এখনও কোনও চাষিকে চিনি না, যিনি এই সব প্রকল্পের সুবিধা পান।’’
বিষ্ণুপুরের আমডহরা গ্রামের চাষি আইজুল খান অন্যের জমি ‘লিজ়’ নিয়ে চাষ করেন। নিজস্ব জমি না থাকায় তিনি চাষি হয়েও ফসল বিমা বা কৃষকবন্ধুর সুবিধা পাচ্ছেন না বলে আক্ষেপ আইজুলের। তিনি বলেন, “চাষই আমার পেশা। বহু বছর ধরে এই পেশায় থেকেও সরকারি সুযোগ কিছু পাইনি। আমি দরিদ্র চাষি। নিজের জমিও নেই। চাষিদের জন্য রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের কী প্রকল্প রয়েছে, তা জেনে আমার কী হবে?
অন্য দিকে, ইঁদপুরের হীরাশোল গ্রামের প্রান্তিক চাষি নারান তন্তুবায় রাজ্যের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের উপভোক্তা। কিন্তু তা নিয়েও তাঁর অভিযোগ রয়েছে। তিনি দাবি করেন, “কৃষকবন্ধু প্রকল্পে চাষের জন্য যে টাকা পাই, তা মোটেও যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও হাতে পেলে বরং কিছুটা উপকার হত।”
বাঁকুড়া জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, এই জেলায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আড়াই লক্ষেরও বেশি পরিবার কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতায় এসেছে। জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, ‘‘কৃষকবন্ধু প্রকল্পের কথা সমাজের সর্বস্তরে প্রচার করা হয়েছে। তার পরেও কারও এই প্রকল্পের নিয়ম-কানুন অজানা থাকার কথা নয়।’’