হাতিপাথর গ্রামে পিকনিক স্পট সাজানোর কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র
এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে পারদর্শিতার নজির দেখিয়ে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দীনদয়াল উপাধ্যায় পুরস্কার পাচ্ছে পুরুলিয়ার মানবাজার ১ ব্লকের জিতুজুড়ি পঞ্চায়েত। ২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার ও সংরক্ষণে কর্মদক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ ওই পুরস্কার বলে জানিয়েছেন জিতুজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূলে প্রধান মিঠু সোরেন। তিনি বলেন, ‘‘দলগত ভাবে কাজ করাতেই এই সাফল্য। পঞ্চায়েতের সবার কৃতিত্ব।’’ বিডিও (মানবাজার ১) নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘খবর নিয়ে জেনেছি, পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ১৬ লক্ষ টাকা। ওই টাকা পঞ্চায়েতের উন্নয়নে কাজে লাগানো যাবে।’’
জিতুজুড়ি পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক রাজু দাস জানান, প্রত্যেক পঞ্চায়েতকে অনলাইনে কাজের মূল্যায়নের একটি আবশ্যক ফর্ম পূরণ করতে হয়। সাধারণ বিভাগ ছাড়া,ও তাঁরা প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের ফর্ম পূরণ করেছিলেন। এই বিভাগে একশো দিনের কাজে উল্লেখযোগ্য শ্রমদিবস সৃষ্টি, স্থায়ী সম্পদ তৈরি, জল সংরক্ষণ, ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বাড়ানো, বনসৃজন প্রভৃতি রয়েছে। পঞ্চায়েতের ১২টি সংসদকেই সমান ভাবে উন্নয়নের তালিকায় রাখা হয়েছে।’’
ওই পঞ্চায়েতের ১২টি আসনই তৃণমূলের দখলে। বিজেপির মানবাজার ১ মণ্ডল সভাপতি বাণীপদ কুম্ভকারের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি। কাগজে-কলমেই
উন্নয়ন হয়েছে।’’
তবে পঞ্চায়েতের সচিব নন্দকিশোর দাসের দাবি, ‘‘২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে ২,৮৬৪ জন কাজ চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। সবাইকে কাজ দেওয়া হয়। ওই বছর ৮০,৫২৯ শ্রমদিবস সৃষ্টি করা হয়। ২০১৯-’২০ আর্থিক বছরে শ্রমদিবসের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৯৯ হাজার হয়েছে। শ্রম দিবস বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী সম্পদও তৈরি করা হয়েছে।’’
জিতুজুড়ি পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্লকে পশুপক্ষীর হাটে তারা সৌরশক্তির সাহায্যে পানীয় জলের ব্যবস্থা ও ছাউনি তৈরি করে দিয়েছে। এ ছাড়া, ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট স্কিম’-ও ওই পঞ্চায়েতে চালু হতে যাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ জলস্তর বাড়ানোর জন্য তিনটি গ্রামে জল বিভাজিকা প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। পাথরকাটা গ্রামে স্বনির্ভর দলের সদস্যদের বিশ্রাম ও বৈঠকের জন্য ‘ওয়ার্ক শেড’ তৈরি করা হয়েছে।
এ ছাড়া, বেঞ্চাবনি, পাথরকাটা ও শালদহি গ্রামে তিনটি খেলার মাঠ বেছে নিয়ে সেখানে মিনি স্টেডিয়াম গড়ার কাজ চলছে। এলাকায় প্রতিটি সংসদে জল উত্তোলনে সৌরশক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে উদ্যানপালন বিভাগের সাহায্যে বেঞ্চাবনি ও রাজগ্রামে ৯ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির আমের বাগান তৈরি করা হয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিশিষ্ট হাতিপাথর গ্রামে পিকনিক স্পট তৈরির কাজ চলছে।