বোলপুরে বিজেপি-র প্রতিবাদ। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
অন্তঃসত্ত্বা বধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অস্ত্র-সহ ভয় দেখানো, মারধর, খুনের চেষ্টা ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ধৃত তিন অভিযুক্তের জামিনের আর্জি নামঞ্জুর করল বোলপুর আদালত। অভিযুক্তদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বোলপুরের এসিজেএম সঙ্ঘমিত্রা পোদ্দার। এ দিকে এ দিনই নির্যাতিতা তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখান মহিলা পুলিশ কর্মীকে। সেই রাতের ঘটনার কথা এবং বয়ান লিপিবদ্ধ করে ইলামবাজার পুলিশ।
রবিবার দুপুরে বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জেলার পাঁচ সদস্যা এবং বিকেলে দলের জেলা আহ্বায়ক অর্জুন সাহার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে ওই নির্যাতিতা বধূর সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলেন তাঁর পরিবারের সঙ্গেও। বিজেপির প্রতিনিধি দলটি হাসপাতাল চত্বরে পোস্টার হাতে একটি মিছিল করে ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ করে। এই ঘটনায় তৃণমূলের দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবি জানায় বিজেপি নেতৃত্ব।
জেলা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে ইলামবাজার থানার সায়েরপুর গ্রামের আদিবাসী অন্তঃসত্ত্বা বধু ও তাঁর পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সুকুমার সরেন সহ একাধিক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। এই মর্মে ওই বধূর স্বামী শনিবার দুপুরে ইলামবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। নির্যাতিতার স্বামীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৫০৬ (ভয় দেখানো), ৩০৭ (খুনের চেষ্টা), ৩৭৬/৫১১ (ধর্ষণের চেষ্টা), ১৪৭, ১৬৮ (অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হয়ে হামলা করা), ৩২৩ (আঘাত করা) এবং ৩২৫ (একযোগে একাধিক ব্যক্তি অপরাধ করা) ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
রবিবার দুপুরে বিজেপির মহিলা সভানেত্রী স্বাগতা বলেন, “রাজ্যজুড়ে একের পর এক কাণ্ড ঘটেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জন মহিলা। অথচ এই রাজ্যেই মহিলাদের সম্মান রাখা মুশকিল হচ্ছে। ইলামবাজার থেকে পাড়ুই, সাত্তোর কোথাও রেহাই নেই!’’
এ দিন বিকেলে বিজেপির জেলা আহ্বায়ক অর্জুন সাহার নেতৃত্বে দলের সাধারণ সম্পাদক রামকৃষ্ণ রায়, জেলা কমিটির সম্পাদক চিত্তরঞ্জন সিংহ, দলের জেলা সহ-সভাপতি দিলিপ ঘোষ, কাশীনাথ মিশ্র প্রমুখ দেখা করতে যান বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অর্জুন বাবু বলেন, “কাউকেই রেহাই দিচ্ছে না তৃণমূল। অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলাকে পর্যন্ত মারধর করছে। এ কোন রাজ্যে আমরা বাস করছি। স্রেফ বিজেপি করার অপরাধে তার মাসুল এই ভাবে দিতে হবে। এটা কি গনতন্ত্র?’’