অভিনেতা অর্জুন কপূর। ছবি: সংগৃহীত।
‘সিংহম আগেন’ ছবিতে খলচরিত্রে দর্শকের প্রশংসা পাচ্ছেন অর্জুন কপূর। সেই ছবিরই প্রচারে এক সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে অর্জুন বলেন, তিনি ‘হাসিমটো’ রোগে আক্রান্ত। হাসিমটো হল এক ধরনের অটোইমিউন রোগ, যেখানে থাইরয়েড গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
অর্জুন বলেন তিনি ৩০ বছর বয়সে জানতে পারেন যে তিনি হাসিমটো রোগে আক্রান্ত। অর্জুন বলেন, ‘‘আমার মায়েরও এই সমস্যা ছিল। বোন অংশুলাও হাসিমটো রোগে আক্রান্ত। এই কারণেই আমার ওজন বেড়ে যায় মাঝেমধ্যেই। গত সাত-আট বছর ধরে আমি এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছি।’’
হাসিমটো রোগে আক্রান্ত হলে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যায়, এই পরিস্থিতিকে হাইপোথাইরয়েডিজ়ম বলে। থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ কমে গেলে বিপাকক্রিয়ার গতিও কমে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে ওজন বেড়ে যায়, কারও ক্ষেত্রে আবার কমে যায়। শুধু ওজনই নয়, এই রোগে আক্রান্ত হলে হার্ট ও মস্তিষ্কের উপরেও প্রভাব পড়ে।
হাসিমটো রোগের উপসর্গ কী?
১) অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠা
২) ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া
৩) ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া
৪) গাঁটে গাঁটে ব্যথা, পেশিতে যন্ত্রণা
৫) মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, সন্তানধারণে সমস্যা
৬) মানসিক অবসাদ
৭) হার্টের সমস্যা
মহিলাদের ক্ষেত্রে হাসিমটো রোগের ঝুঁকি বেশি। তবে ছেলেদেরও এই রোগ হতে পারে। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সিদের মধ্যে এই রোগ বেশি ধরা পড়ে। রিউমাটয়েড, টাইপ-১ ডায়াবিটিসের মতো অটোইমিউন রোগে আগে থেকেই আক্রান্ত হলে এই রোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
হাসিমটো রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই অর্জুন মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন। অর্জুন বলেন, এই সমস্যা মোকাবিলার জন্য তাঁকে থেরাপিও করাতে হচ্ছে। ছোট থেকেই চেহারা ভারী ছিল বলে সব সময়ই অজানা আতঙ্ক, কটাক্ষের ভয় কাজ করত তাঁর মনে। পরবর্তী কালে বক্স অফিসে তাঁর ছবি তেমন ভাবে সাফল্য পাচ্ছিল না বলেও তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। অর্জুন বলেন, ‘‘গত বছর থেকে আমি থেরাপি নিতে শুরু করেছি। আমি বুঝতে পারছিলাম না সমস্যাটা ঠিক কোথায় হচ্ছিল, তবে কোনও কিছুই ঠিক চলছিল না জীবনে। অন্যের কাজ বড় পর্দায় দেখে খালি মনে হত, আমি এর পর কাজ পাব তো? আমার চিন্তাধারা কখনওই এতটা নেতিবাচক ছিল না আগে, তবে ধীরে ধীরে আমার বিরক্ত লাগতে শুরু করেছিল। সাহায্যের জন্য অনেক থেরাপিস্টের কাছে গিয়েছিলাম, কেউ সাহায্য করতে পারছিল না। শেষমেষ এক জন থেরাপিস্ট আমার সমস্যা বুঝলেন, তিনি বললেন আমি মানসিক অবসাদে ভুগছি।’’