গ্রামে মাদক কারবারের বাড়বাড়ন্ত দেখে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। লড়াইয়ে তাঁরা পাশে পেয়েছিলেন স্থানীয় ক্লাবকেও। প্রতিরোধের মুখে ভাটা পড়ছিল কারবারে। তারই বদলা নিতে মঙ্গলবার সকালে বীরভূমের সিউড়ি ১ ব্লকের কুখুডিহি গ্রামে মাদক কারবারিরা তুলকালাম চালায় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। দফায় দফায় চলে বোমাবাজি। মারধর, ঘর ভাঙচুরও করা হয়।
জেলার এসপি নীলকান্ত সুধীর কুমার অবশ্য বলেন, ‘‘মাদক কারবারের প্রতিবাদের জেরেই হামলা কি না, তা স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক তদন্তে আমরা জেনেছি, এক জনকে মারধর করাকে কেন্দ্র করে দু’টি পাড়ার মধ্যে সংঘাতের জেরে ওই হামলা।’’ আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সিউড়ি থেকে সাঁইথিয়া যাওয়ার রাস্তা ঘেঁষে কুখুডিহি গ্রাম। পূর্ব ও পশ্চিমপাড়া মিলিয়ে গ্রামে জনসংখ্যা হাজার চারেক। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামেরই কয়েক’টি পরিবার ব্রাউন সুগার এবং গাঁজার কারবারে যুক্ত। মাদক কারবারিরা এতটাই বেপরোয়া যে গাড়িতে ‘পুলিশ’ লেখা স্টিকার সেঁটে তারা ঘুরে বেড়ায়। তাদের দৌলতে এলাকাতেও ছড়াচ্ছে মাদকের জাল। নেশায় আসক্ত তরুণ প্রজন্মের অনেকে। প্রতিবাদে গত ৩ মে একটি মিছিলের আয়োজন করে গ্রামের পূর্ব পাড়ার ‘আনকমন’ ক্লাব। সহযোগিতায় ছিল সিউড়ি পুলিশ। মিছিলে পা মেলান জনা পঞ্চাশ স্থানীয় মহিলা।
ক্লাবের সম্পাদক মনিরুল ইসলামের দাবি, ‘‘ওই মিছিলের পর থেকেই মাদক কারবারে ভাটা পড়ে। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তাতেই খেপে গিয়ে এ দিন বোমাবাজি করে মাদক কারবারিরা।’’ অভিযোগ, মাদক কারবারে জড়িত শেখ মিলনের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতী এই হামলা চালায়। মারধর করা হয় গ্রামের মহিলাদেরও। বোমার স্প্লিনটারে জখম হন এক ক্লাব-সদস্য। গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, নালায় না-ফাটা বোমা পড়ে রয়েছে। ক্লাবের দেওয়ালে, একাধিক বাড়ির গায়ে বোমা বিস্ফোরণের দাগ। পড়ে রয়েছে সুতলি, ইটের টুকরো। ক্লাব-সদস্যদের দাবি, সোমবার বিকেলে তাঁদের চার জনকে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। রাতে পুলিশ গ্রামে ছিল। সকালে পশ্চিমপাড়ায় আর এক ক্লাব সদস্যকে মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ যেতেই দুষ্কৃতীরা হামলা করে পূর্বপাড়ায়। বোমাবাজিতে অন্যতম অভিযুক্ত শেখ মিলনের বাড়ি থেকে ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটা একটি সাদা এসইউভি গোত্রের গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে মিলন পলাতক।