কর্মসমিতি থেকে ইস্তফা ঘিরে গুঞ্জন বিশ্বভারতীতে

ইস্তফা দেওয়ার কারণ হিসেবে শেলীদেবী বলেন, ‘‘কর্মসমিতির সদস্য হিসেবে আমার কিছু দায় এবং দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন সেগুলি পালন করার কোনও জায়গা বিশ্বভারতী দিচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত কোনও উপায় না পেয়ে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলাম।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০৩:০৯
Share:

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি থেকে ইস্তফা প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপকের।

বিশ্বভারতী কর্মসমিতির ‘এক্সটার্নাল মেম্বার’ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক শেলী ভট্টাচার্য। তিনি কর্মসমিতির উপাচার্য মনোনীত এক্সটার্নাল সদস্য ছিলেন।

Advertisement

মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে চিঠি লিখে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। যদিও কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও এ নিয়ে তাঁকে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

ইস্তফা দেওয়ার কারণ হিসেবে শেলীদেবী বলেন, ‘‘কর্মসমিতির সদস্য হিসেবে আমার কিছু দায় এবং দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন সেগুলি পালন করার কোনও জায়গা বিশ্বভারতী দিচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত কোনও উপায় না পেয়ে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলাম।’’

Advertisement

উপাচার্যকে পাঠানো চিঠিতেও তিনি ইস্তফা দেওয়ার কারণ জানিয়েছেন। শেলীদেবীর অভিযোগ, কর্মসমিতির বৈঠকে জটিল বিষয় নিয়ে সে রকম কোনও আলোচনা হয় না। দু-তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার পরে সেগুলি স্থগিত থেকে যায় দিনের পর দিন। ইদানিং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কর্মসমিতির বৈঠকে জানিয়ে দিচ্ছে।

বৈঠকে জানিয়ে দেওয়ার পরে আলোচনার জায়গা আর থাকছে না। চিঠিতে শেলীদেবী জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এমন অব্যবস্থা শুরু হয়েছে। এমনকী তিনি যে সমস্ত বিষয় নিয়ে কথা তুলেছেন, সেগুলি নিয়ে কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেননি।

তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বভারতী অ্যাক্ট অ্যান্ড স্ট্যাটিউট থেকেই স্পষ্ট কর্মসমিতি এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা, কাজ কী। কিন্তু সেই অনুযায়ী কিছুই হচ্ছে না।’’ এই অবস্থায় কিছুটা নিরুপায় হয়েই তাঁকে ইস্তফার পথ বেছে নিতে হয়েছে বলে জানান শেলীদেবী। বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মঙ্গলবার একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। তবে এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।’’

বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে রজতকান্ত রায় উপাচার্য থাকাকালীন শেলী ভট্টাচার্য ‘এক্সটার্নাল মেম্বার’ হিসেবে কর্মসমিতিতে যোগ দেন। প্রথম পর্যায়ের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়েও তিনি উপাচার্য মনোনীত এক্সটার্নাল মেম্বার ছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্য়ায়ের শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালে। তার আগেই এ ভাবে ইস্তফার পথে এগোনোয় গুঞ্জন উঠেছে বিশ্বভারতীর অন্দরে।

প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ কয়েক জন কর্মী এবং অধ্যাপক জানান, বর্তমানে কর্মসমিতির বৈঠকগুলিতে সে রকম কোনও আলোচনা, সিদ্ধান্ত কিছুই হয় না। পৌষমেলা নিয়ে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে তা সকলকে জানিয়ে দিলেন। কিন্তু তা কর্মসমিতি অনুমোদন করেছে কিনা জানা যায়নি।

তাঁদের কথায়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসমিতি থাকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। সেই সিদ্ধান্তও যদি বিশ্বভারতীর প্রশাসন নিয়ে নেয়, তা হলে কর্মসমিতির গুরুত্ব কোথায়?’’ এ রকম চলতে থাকলে শুধু শেলী ভট্টাচার্যই নন, ভবিষ্যতে আরও অনেকেই বিশ্বভারতী কর্মসমিতির সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তাঁদের একাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement