CCTV

murder: গভীর রাতে শব্দ পরীক্ষা

শনিবার সকালে ওই আবাসনের তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বৃদ্ধ দম্পতি ক্ষীরোদসিন্ধু রায় ও কৃষ্ণা রায়ের দেহ। গলায় ছিল ধারাল অস্ত্রের ক্ষত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২১ ০৭:৪৪
Share:

ক্যামেরার নজরে। নিজস্ব চিত্র।

পুরুলিয়া শহরের ওয়েস্ট লেক রোডের আবাসনে জোড়া খুনের তদন্তে দেড় দিন পরেও কোনও সূত্র পেল না পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। তদন্ত চলছে।’’ শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত ওই আবাসনে ছিলেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

শনিবার সকালে ওই আবাসনের তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বৃদ্ধ দম্পতি ক্ষীরোদসিন্ধু রায় ও কৃষ্ণা রায়ের দেহ। গলায় ছিল ধারাল অস্ত্রের ক্ষত। নিরাপত্তার ঘেরাটোপ পেরিয়ে কী ভাবে আততায়ী পৌঁছল, রহস্য জট পাকিয়েছে তা নিয়ে। বিস্মিত অন্য আবাসিকেরাও।

নিহত দম্পতির পড়শি সুশীলকুমার আগরওয়াল বলেন, ‘‘দিনভর ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এখন আতঙ্ক গ্রাস করেছে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক আবাসিক বলেন, ‘‘নীচে দিনরাত নিরাপত্তারক্ষী থাকে। তার পরেও এটা হল। ভাবলে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।’’

Advertisement

আবাসনটির মূল দু’টি প্রবেশ পথ, ছাদ এবং বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি ক্যামেরা রয়েছে। সোসাইটির সম্পাদক প্রবীর অধিকারীর কথায়, ‘‘বাইরের লোক চট করে কোনও ফ্ল্যাটে যেতে পারবেন না। নীচে নিরাপত্তারক্ষীদের আগে জানাতে হয়। তাঁরা নাম-পরিচয় জেনে ফোন করে গৃহস্থের অনুমতি নিয়ে তবেই ছাড়েন।’’

কেউ জিনিসপত্র পৌঁছতে এলেও নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে দিয়ে যেতে হয় বলে জানান প্রবীরবাবু। তাঁর দাবি, রক্ষীদের বিপদসঙ্কেত দেওয়ার ব্যবস্থা আছে সব ফ্ল্যাটে। তবে আবাসনের ভিতরে বারান্দাগুলিতে ক্যামেরা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘এই ঘটনার পরে আমরা ঠিক করেছি, এ বার প্রতি তলায় ক্যামেরা বসানো হবে।’’

শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত তদন্তকারীরা আবাসনটি ঘুরে দেখেন। ভিতরে কোথাও শব্দ হলে কতদূর থেকে তা কানে পৌঁছয়, কথাবার্তার আওয়াজই কতদূরে যায়— পরীক্ষা করে দেখেন তাঁরা। নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়।

ন’বছর আগে, ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল পুরুলিয়া শহরের নীলকুঠিডাঙায় নিজেদের বাড়িতে গলা কেটে খুন করা হয়েছিল বৃদ্ধ দম্পতি রামশঙ্কর কোঠারি ও সুশীলা কোঠারিকে। তাঁদের ছেলেরা বাইরে থাকতেন। ফোন না তোলায় দিল্লি থেকে এক ছেলে শহরের বন্ধুকে বাবা-মার খবর নিতে বলেন। তার পরেই দেহ উদ্ধার হয়।

ওই ঘটনায় বসার ঘরে চায়ের কাপ, প্লেটে খাবার পড়ে ছিল। পাড়ার কেউ কোনও শব্দ পাননি। ঘর থেকে পাওয়া একটি ব্যাঙ্কের রসিদের সূত্র ধরে পুরুলিয়া শহর ও দিল্লি থেকে দুই ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধার নেওয়া টাকা শোধ করার জন্য চাপ দেওয়ায় পুরুলিয়া শহরের ব্যবসায়ী বিজয় আগরওয়াল দম্পতিকে খুন করান বলে জানা যায়।

ওয়েস্ট লেক রোডের ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন শহরের পুরনো অনেক বাসিন্দা। এ ক্ষেত্রেও পড়শিরা কোনও শব্দ পাননি বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। তালা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢোকার কোনও চিহ্ণ প্রাথমিক তদন্তে পায়নি পুলিশ। আততায়ী বা আততায়ীরা ওই দম্পতির পরিচিত হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ক্ষীরোদসিন্ধুবাবুর মেয়ে অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement