প্রলয় কর্মকার। —নিজস্ব চিত্র।
‘চন্দ্রযান ৩’-এর পরে ‘আদিত্য এল ১’-এর দায়িত্বে রয়েছেন বাঁকুড়ার আর এক কৃতী সন্তান। তালড্যাংরার বিবড়দা গ্রামের প্রলয় কর্মকার। ইসরোর এই ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছি। এই দায়িত্ব পেয়ে আমি গর্বিত।’’
বিবড়দার ছেলে হলেও প্রলয়ের শিক্ষা ও বেড়ে ওঠা বাবার চাকরির সুবাদে দিল্লিতে। তাঁর বাবা অপূর্ব কর্মকার সিআরপি জওয়ান ছিলেন। সেখান থেকেই দিল্লির এসপিজিতে যোগ দেন তিনি। প্রলয় দিল্লির কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বরাবরই মেধাবী ও লাজুক স্বভাবের প্রলয় আম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে বি টেক করেন। এরপরে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (আইআইএসসি) থেকে এমটেক। তখনই তাঁর ইসরোয় যোগ দেওয়ার ইচ্ছে তৈরি হয়।
কিছুদিন একটি বেসরকারি সফটওয়্যার সংস্থায় চাকরি করেন। প্রথমবার ইসরোর পরীক্ষায় বিফল হলেও দ্বিতীয়বার সফল হন। ২০১৮ সালে যোগ দেন বেঙ্গালুরুর ইসরোর ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।
প্রলয়ের বাবা অপূর্ব বলেন ‘‘চন্দ্রযান ৩ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ছেলের। গতিবিধি নিয়ন্ত্রণকারী দলে সে ছিল। রকেটের উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে চন্দ্রপৃষ্ঠে বিক্রমের অবতরণ পর্যন্ত তারা দায়িত্ব সামলায়। এখন সে আদিত্য এল ১ গতিবিধি নিয়ন্ত্রণকারী দলে রয়েছে।’’
তিনি জানান, ওই কাজ এতই গুরুত্বপূর্ণ যে গত দু’মাসের বেশির ভাগ সময় প্রলয়ের অফিসেই কাটছে। আদিত্য এল ১ উৎক্ষেপণের পরে তাঁর বাড়ি আসা আরও কমেছে। গত কয়েক দিন ধরে রাত ১২টা-১টায় তিনি বাড়ি ফিরছেন। আবার সকাল ৭টায় বেরিয়ে যেতে হচ্ছে। কখনও সখনও ভোর ৩টেতেও বেরিয়ে যেতে হয়েছে।
অপূর্ব বলেন, ‘‘ছেলের কাছে শুনেছি কোনও মহাকাশযান উৎক্ষেপণের পরে পৃথিবীকে কয়েকবার চক্কর কাটে। তারপর গতি বাড়িয়ে অন্য কক্ষপথ ধরে। সম্প্রতি কক্ষপথ পরিবর্তন ও গতি বাড়ানোর সময় ভীষণ ব্যস্ত ছিল প্রলয়। এখনও খুব সময় ওর সাথে কথা হয়।’’
ছেলের ব্যস্ততার কারণে বেঙ্গালুরুতে তাঁর বাড়িতে স্ত্রী অঞ্জনাকে নিয়ে গিয়েছেন অপূর্ব। প্রলয়ের মা অঞ্জনা বলেন, ‘‘ওদের লড়াই যেন সফল হয়।’’