dubrajpur

নাম থেকেও মিলছে না বাড়ি

তিনি জানতে পারেন, তাঁর জবকার্ড নম্বরে ইতিমধ্যেই সরকারি আবাস যোজনায় নাকি বাড়ি পাওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনি তো এখনও কাঁচা বাড়িতেই বসবাস করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১১
Share:

আবাস যোজনা নিয়ে পথে বামেরা। নিজস্ব চিত্র

আবাস প্লাস-এর উপভোক্তার তালিকায় নাম রয়েছে দুবরাজপুর ব্লকের চিনপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের এলামার বাসিন্দা প্রৌঢ়া নীলিমা বিশ্বাসের। নতুন বাড়ি পাবেন বলে খুশিতেই ছিলেন। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে উপভোক্তার উপযুক্ততা যাচাইয়ের সময়ে।

Advertisement

তিনি জানতে পারেন, তাঁর জবকার্ড নম্বরে ইতিমধ্যেই সরকারি আবাস যোজনায় নাকি বাড়ি পাওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনি তো এখনও কাঁচা বাড়িতেই বসবাস করেন। এমনটা কী করে ঘটল? স্বামী পুলীন বিশ্বাসকে নিয়ে বিডিও অফিসে ছুটে এসেছিলেন ওই প্রৌঢ়া। নীলিমার প্রশ্ন, ‘‘তালিকায় নাম থাকা প্রকৃত উপভোক্তা হওয়া সত্ত্বেও কেন বাড়ি পাব না? আমার দোষ কোথায়?’’ তাঁকে আশার আলো দেখাতে পারেননি ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও।

প্রায় কাছাকাছি সমস্যা হেতমপুর পঞ্চায়েত এলাকার চন্দন গড়াইয়ের। জানা গিয়েছে, চন্দনের নাম আবাস প্লাস তালিকায় ছিল। কিন্তু তাঁর জবকার্ডটি বাতিল হয়ে যাওয়ায়, তিনি ঘর পাচ্ছেন না। বিডিও অফিসে চন্দনের আর্জি জবকার্ডটি রিনিউ করে দিলেই কাঁচা বাড়ি পাকা হয়ে যায় বলে মত চন্দনের। কিন্তু সমস্যা এত সহজে মিটবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ব্লক প্রশাসন। যাঁদের অনেকের পাকা দোতলা বাড়ি, গাড়ি, সরকারি চাকুরি রয়েছে তাঁদের নামও আবাস প্লাসের তালিকায় উঠেছে বলে রাজ্য জুড়ে অভিযোগ মিলছে। কেন পাকা বাড়িহীনদের জবকার্ড সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে হবে, এই প্রশ্নও উঠছে।

Advertisement

শুধু দুবরাজপুর নয়, পদ্ধতিগত জটিলতার জন্য জেলায় আবাস প্লাসের তালিকায় নাম থাকা প্রকৃত উপভোক্তাদের একটা অংশও সমস্যায় পড়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, জবকার্ড না থাকলে আবাস প্লাসে বাড়ি পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু জবকার্ড নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। কার্ড থাকা সত্ত্বেও একেবারেই কাজ না করা বা শুধু ৯০ দিন কাজ করা (প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য ১০০ দিনের কাজে ৯০ দিনের হাজিরা দেওয়া হয়) বা জবকার্ডধারী পরিবারের অন্য কোনও সদস্য বাড়ি পেয়ে থাকলে আবাস যোজনায় বাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়।

দুবরাজপুর ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, একটা সময় কেবল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি তৈরি জন্য জবকার্ড তৈরি হত। এলেমার ওই প্রৌঢ়ার ক্ষেত্রে সম্ভবত তেমনটাই ঘটেছে। অন্য দিকে, চন্দন গড়াইয়ের যে জবকার্ড ডিলিট হয়েছে, সেটা আগে তাঁর দাদার নামে ছিল। দাদা বাড়ি পেয়েছেন। পরে দাদা অন্য জবকার্ড তৈরি করিয়ে নেওয়ায় আগের কার্ডটি ডিলিট হয়ে গিয়েছে।

দুবরাজপুরের বিডিও রাজা আদক বলেন, ‘‘এ রকম আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা পঞ্চায়েতগুলিকে বলে রেখেছি, যাঁরা এ বার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও জবকার্ডের সংক্রান্ত জটিলতায় বাড়ি পাচ্ছেন না, তাঁদের আলাদা তালিকা তৈরি করতে। যাতে ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে এই পরিবারগুলিকে বাড়ি দেওয়া যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement