তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে হুমকি পোস্টার, তদন্ত

ক’দিন আগেই সিপিএমের পার্টি অফিস বেদখল করে তৃণমূলের মহিলা সমিতির অফিস খোলা হয়েছিল। এ বার সেই বরাবাজারেই তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল। সাদা কাগজে লালকালিতে লেখা ‘সুমিতা সিংহ মল্লের মুণ্ড চাই’। তলায় লেখা ছিল ‘লাল সেলাম’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বরাবাজার শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০২:১৯
Share:

ক’দিন আগেই সিপিএমের পার্টি অফিস বেদখল করে তৃণমূলের মহিলা সমিতির অফিস খোলা হয়েছিল। এ বার সেই বরাবাজারেই তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল। সাদা কাগজে লালকালিতে লেখা ‘সুমিতা সিংহ মল্লের মুণ্ড চাই’। তলায় লেখা ছিল ‘লাল সেলাম’। পুরুলিয়া জেলার জঙ্গলমহল এলাকার মধ্যে বরাবাজারে এই পোস্টার পড়ায় বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত সব পোস্টার তুলে নিয়ে যায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে এই পোস্টার ছড়াল আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’

Advertisement

সুমিতাদেবী পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্য। দাপুটে নেত্রী বলেও এলাকায় তাঁর পরিচিতি রয়েছে। তার বিরুদ্ধে এই পোস্টার পড়ায় স্বাভাবিক ভাবে এলাকায় চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে কারা এই পোস্টার সাঁটিয়েছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, বরাবাজারের বাইপাসে, জলট্যাঙ্ক মোড়ে, উপরপাড়া, নামোপাড়া— এ রকম কয়েকটি জায়গায় পোস্টারগুলো সাঁটানো ছিল। এক রাতের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের পোস্টার মেলায় পুলিশের ধারনা এটা মোটেই একজনের কাজ নয়, বেশ কয়েকজনের এতে জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

জঙ্গলমহলের এই এলাকায় তবে কি মাওবাদীরা ওই পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছে? এমন ধারনাও কেউ কেউ বিশ্বাস করছেন। তবে জেলার এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিক দাবি করেছেন, লেখার ধরণ দেখে এটা মাওবাদীদের নয় বলেই মনে হয়েছে। যদিও সুমিতাদেবীর দাবি, ‘‘এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে সিপিএম এই কাণ্ড করেছে। আমি পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছি রাতে পুলিশি টহল থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে একাধিক জায়গায় এই পোস্টার পড়ল?’’ তার দাবি, এলাকায় বিভিন্ন কাজে তিনি সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। সেই প্রতিহিংসাতেই সিপিএম এই কাণ্ড করেছে বলে তাঁর অভিযোগ।

Advertisement

সুমিতাদেবীর মতের পক্ষেও দলের কিছু কর্মীর সায় মিলেছে। তাঁদের কারও কারও ব্যাখ্যা, সম্প্রতি বরাবাজারে সিপিএমের একটি পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করে। রাতারাতি সিপিএমের সেই অফিসে তৃণমূলের বরাবাজার ব্লক মহিলা সমিতির খোলা হয়। এই ঘটনায় সুমিতাদেবী প্রধান ভূমিকায় ছিলেন বলে অভিযোগ। এর পরেই তাঁর নামে ওই হুমকি পোস্টার পড়ায়, পার্টি অফিস দখলের গন্ধ পাচ্ছেন কেউ কেউ।

তবে বরাবাজারের বাসিন্দা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপ পোস্টার-কাণ্ডের দায় তৃণমূলের ঘাড়েই চাপিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এই ধরনের নোংরা কাজে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করি। সভায়-মিছিলে আমরা জবাব দিই। আমার ধারনা, ওই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীই এই কাজ করে থাকতে পারে। টাকা-পয়সার ভাগ নিয়ে গোলমালে ওই পোস্টার পড়তে পারে।’’ আবার স্থানীয় তৃণমূলেরই একটি অংশ জানাচ্ছে, কোনও ভাবে প্রাণসংশয়ের হুমকি থাকলে সেই নেতা-নেত্রী অনেক সময় দেহরক্ষী পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব পান। এ ক্ষেত্রেও তেমনটা হওয়ার সম্ভবনাও তাঁরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। যদিও এ সম্ভাবনা নিয়ে ওই নেত্রী কিছু বলতে চাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement