প্রতীকী ছবি।
দক্ষ শিক্ষক নেই, অভাব ঘরের। নড়বড়ে অবস্থা জেলার ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পঠন পাঠনের। জেলার যে দু’টি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম দু’বছর আগে শুরু হয়েছিল, সেই দু’টিতেই বর্তমান শিক্ষাবর্ষে একজন পড়ুয়াও পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয় নি। যে সমস্ত পড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিল সেই সমস্ত পড়ুয়াদের একাংশ বাংলা মাধ্যমে ফিরে এসেছে। অনেকে অন্য স্কুলে চলে গিয়েছে।
রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে জেলার রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবন এবং রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়— এই দু’টি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পাঠক্রম চালু করা হয়। দু’টি স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণিতে ৪০ জন করে পড়ুয়া ভর্তি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনে বর্তমানে সপ্তম শ্রেণিতে ৩০ জন এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২৫ জন ছাত্র আছে। রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ২৩ জন এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৫ জন ছাত্রী।
দু’টি স্কুলেই ইংরেজি মাধ্যম থেকে পড়ুয়াদের একাংশ বাংলা মাধ্যমে ফিরে এসেছে। তবে বর্তমান শিক্ষাবর্ষে দু’টি স্কুলেই একজন পড়ুয়াও ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হয়নি। অনেকে ভর্তি হতে চাইলেও পরিকাঠামোগত ত্রুটির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষই নতুন করে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করতেও চাননি।
অভিভাবকদের একাংশের দাবি, যে উদ্দেশ্য নিয়ে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়েছিল তাতে অনেকেই উৎসাহ নিয়ে নিজেদের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠনের জন্য দক্ষ ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক-শিক্ষিকা কোনও স্কুলেই নিয়োগ করা হয়নি। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য বাড়তি খরচ দিয়ে পড়ুয়াদের গৃহশিক্ষকদের সাহায্য নিতে হচ্ছে। সেই কারণে অভিভাবকদের একাংশ তাঁদের ছেলে মেয়েদের ইংরেজি মাধ্যম থেকে বাংলা মাধ্যমে ফিরিয়ে এনেছেন বলে অভিভাবকেরা জানান।
স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষকের অভাবে কীভাবে পঠন পাঠন চালু থাকবে সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রে খবর, দু’টি স্কুলেই পরিকাঠামোগত ত্রুটি আছে। ঘরের অভাব থাকা সত্ত্বেও দু’টি স্কুল তাদের একটি করে ঘর পঞ্চম শ্রেণি থেকে ইংরেজি মাধ্যমের জন্য দিয়েছিল। এ বছর সপ্তম শ্রেণির জন্য নতুন আরেকটি ঘর দিতে হবে।
জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর (মাধ্যমিক) সূত্রে জানা যায়, যখন ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হয়েছিল তখন অনেক সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। স্কুল দু’টিতে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য রাজ্য শিক্ষা দফতর জেলা শিক্ষা দফতর থেকে শিক্ষকদের তালিকাও নিয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্কুল দু’টিতেই ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক নিয়োগ করা হয় নি। রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘ইংরেজি মাধ্যম চালু রাখার জন্য আলাদা ভবন দরকার। এখনও পর্যন্ত আলাদা ভবনের জন্য কোনও টাকা বরাদ্দ হয় নি। স্কুলে শিক্ষকেরও অভাব আছে।’’