Bakreshwar

বক্রেশ্বরে ‘বেহাল’ পরিকাঠামো, পর্যটক আসা নিয়ে শঙ্কা

স্থানীয় বাসিন্দা তথা ব্যবসায়ী গৌতম আচার্য, মনোরঞ্জন আচার্য, দেবনাথ মুখোপাধ্যায়, আশোক বাগদি, নিতাই বাগদিরা জানান, এটি জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

বক্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৫
Share:

বক্রেশ্বরে গরমজলের স্নানাগারে ভাসছে শ্যাওলা। নিজস্ব চিত্র।

উষ্ণ প্রস্রবণ স্নান করার জায়গা নোংরা হয়ে আছে। পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। সমস্যা শৌচাগার নিয়েও। রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি পরিকাঠামোর সমস্যাও। জেলার অন্যতম সতীপীঠ ও শৈবপীঠ বক্রেশ্বর নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা, সেবায়েত ও ব্যবসায়ীদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, ‘বক্রেশ্বর উন্নয়ন পর্যদ’ গঠিত হওয়ার পরে কোনও উন্নতি তো হয়নি বরং অবনতি হয়েছে। এই প্রশাসনিক ‘উদাসীনতা’র জন্য যাতে পর্যটকের জেলার অন্যতম পর্যটনস্থল থেকে মুখ ফিরিয়ে না-নেন তা ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়ে মঙ্গলবার জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলাশাসকের (জেলাপরিষদ) কাছে চিঠি দিলেন তাঁরা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা তথা ব্যবসায়ী গৌতম আচার্য, মনোরঞ্জন আচার্য, দেবনাথ মুখোপাধ্যায়, আশোক বাগদি, নিতাই বাগদিরা জানান, এটি জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল। অথচ প্রশাসন কোনও আলোর ব্যবস্থা করেনি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই গাঁটের কড়ি খরচ করে পথবাতি লাগিয়েছেন। আগে কলকাতা থেকে দু’টি সরকারি বাস চলাচল করলেও কোভিডের পরে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এলাকা জুড়ে পানীয় জলের অভাব। উষ্ণপ্রস্রবণ, যা শীতকালে পর্যটক টানার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু, সেটিও অবহেলিত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বর্তমানে জেলা পরিষদের থেকে বরাত নিয়ে সিউড়ির এক ঠিকাদার গরম জলের স্নানাগারের জন্য প্রতি পর্যটকের থেকে ১০ টাকা করে নিচ্ছে। কিন্তু অত্যন্ত অপরিষ্কার সেই স্নানাগারে শ্যাওলা ভাসছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পাশাপাশি, শৌচালয়ের সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে অভিযোগ।

Advertisement

এই পর্যটনস্থলকে ঘিরে ২০১৭ সালে ‘বক্রেশ্বর উন্নয়ন পর্যদ’ গঠিত হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিল, পর্যটনকে কেন্দ্রে করে এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। অভিযোগ, পর্ষদের তত্ত্বাবধানে কিছু পরিকাঠামো তৈরি হলেও পড়ে পড়ে সেগুলিও নষ্ট হচ্ছে। সাধারণ যে সমস্যাগুলি রয়েছে সেগুলিও মিটছে না। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, শ্রাবণে শিবরাত্রি ছাড়া শীতেই পর্যটকেরা বক্রেশ্বরে বেশি আসেন। কিন্তু শীতের শুরুতেই যদি এমন পরিকাঠামোর এমন হাল হয়, তা হলে তাঁরা আসবেন কি না তা নিয়েই আশঙ্কা স্থানীয়দের।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুপুর থেকে বক্রেশ্বরে বেড়াতে এসেছেন পাপাই মণ্ডলের। তিনি বলেন, ‘‘স্নানাগার খুব অপরিষ্কার।’’ সহমত সিউড়ি থেকে আসা সুভাষ দাসও। তিনি বলেন, ‘‘গরমে জলে স্নান সেরে পুজো দিতে দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু স্নানাগারে প্রচুর শ্যাওলা ভাসছে। সিঁড়িগুলি খুব পিচ্ছিল।’’ একই বক্তব্য ডায়মন্ডহারবার থেকে বক্রেশ্বরে বেড়াতে আসা বধূ অনন্যা মণ্ডলেরও। তিনি বলেন, ‘‘পর্যটনস্থলে পরিচ্ছন্ন হওয়া জরুরি।’’

জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘বক্রেশ্বরের সমস্যা নিয়ে সামনেই একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বক্রেশ্বর নিয়ে একটি খসড়া পরিকল্পনাও করা হয়েছে। সেটি দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement