পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে রাজনৈতিক দলের সমর্থনে তৈরী হচ্ছে ফ্লেক্স সিউড়ির এক প্রেসে,বৃহস্পতিবার। ছবিঃতাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জেলা ‘দখল’ করেছিল তৃণমূল। ফলে, সে ভাবে প্রচার হয়নি৷ তবে এ বারে ছবিটা অনেকটা আলাদা। জেলার ২৮৫৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ১,৯৬৮টিতে লড়াই হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৯০টিআসনের মধ্যে ৩৬৩টি আসনে লড়াই হবে। ৫৩টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে লাভপুরের একটি আসন বাদে ৫২টিতে লড়াই হবে। এ পরিস্থিতিতে প্রচারের ঝাঁঝ বাড়াতে চাইছে সব রাজনৈতিক দলই। দলীয় প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পরেই নিজেদের নামে ফ্লেক্স ও ব্যানার ছাপানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। একাধিক ছাপাখানার হিসাব অনুযায়ী ফ্লেক্স ও ব্যানার ছাপানোর ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে তৃণমূল। অনেকটা কম হলেও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। অনেকটাই পিছিয়ে বাম-কংগ্রেস।
প্রেস মালিকদের দাবি, মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং দলীয় প্রতীক দেওয়ার পরে প্রচারের জন্য বিশেষ সময় বাকি না-থাকায় হঠাৎই প্রচণ্ড তাদের উপরে চাপ এসেছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৫০০ ফ্লেক্স ও ব্যানার তৈরি করতে হচ্ছে । এক ছাপাখানার মালিক জানান, রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে শুধুমাত্র প্রার্থীদের নাম ও আনুষঙ্গিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে। এর পরে পুরোটাই তাঁদের করতে হচ্ছে। নকশার দিকটি তাঁদেরই সামলাতে হচ্ছে। একাধিক নকশা তৈরি করে পাঠাতে হচ্ছে। প্রার্থীরা পছন্দ করে দিলে ছাপা হচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রে প্রচারের একঘেয়েমি কাটাতে একই প্রার্থী একাধিক নকশাও ছাপাচ্ছেন বলে জানালেন ছাপাখানর মালিকেরা। ছাপার পরে সেগুলিকে ফ্রেম করে লাগিয়ে দেওয়ার অনুরোধও আসছে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত লোকের অভাবে তা করে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন ছাপাখানার মালিকেরা।সিউড়ির একটি ছাপাখানার মালিক জানান, গত দু’দিনে তৃণমূলের সাতশো এবং বিজেপির ১০০টি ব্যানার ও ফ্লেক্স তৈরি করেছেন। জেলার সমস্ত প্রান্ত থেকেই বরাত আসছে। নাওয়া খাওয়া ভুলে প্রায় সারা দিন ছাপাখানাতেই কাটাতে হচ্ছে। এ বার তৃণমূল প্রার্থীরা বিজেপির সঙ্গে টক্কর দিতে নকশা থেকে দেখনদারি কোনও কিছুতেই খুঁত রাখতে রাজি নন বলেও দাবি তাঁর।
তবে এ বারের প্রচারে পোস্টারের দিকে ঝোঁক প্রায় নেই বললেই চলে বলে দাবি ছাপাখানার মালিকদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, ফ্লেক্স বা ব্যানারের খরচ অনেকটাই সাধ্যের মধ্যে চলে আসায় এবং কাগজের পোস্টারের তুলনায় তা অনেক বেশি টেকসই হওয়ায়, এগুলির দিকেই রাজনৈতিক দলগুলির ঝোঁক।