প্রতীকী ছবি।
এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপান-উতোর তৈরি হল বাঁকুড়ার কোতুলপুরে। মৃত ব্যক্তিকে দলীয় কর্মী বলে দাবি করে বিজেপির অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছে তারা। প্রতিবাদে, বাঁকুড়া শহরে সোমবার সন্ধ্যায় পথ অবরোধও করে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির তরফে টুইট করেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পুলিশ জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কোতুলপুরের গোপালপুর পাথরচটি এলাকায়রাস্তার ধারে একটি গাছে সহদেব খান (৪৫) নামে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ মেলে। তাঁর বাড়ি কোতুলপুরের কোটালদিঘি ধকপাড়ায়। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না-তদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ তিনি জানান, পরিবারের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ না মিললেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও গুজব না ছড়ানোর আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পেশায় আইসক্রিম বিক্রেতা ওই ব্যক্তি কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদেভুগছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’’
মৃতের ভাই নকুল খান জানান, দিন তিনেক আগে পাত্রসায়রে বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন সহদেব। রবিবার সকালে বোন ফোনে জানান, দাদা বাড়িতে নেই। সাইকেল রেখে হয়তো বাসে বাড়ি রওনা হয়েছেন বলে অনুমান করেন তাঁরা। কিন্তু এ দিন সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলার খবর পান তাঁরা। নকুলের অভিযোগ, ‘‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, পা দু’টি মাটিতে ঠেকে রয়েছে। ওর অনেক শত্রু ছিল। আমরা সব সময় আগলে রাখতাম। আগে বিজেপি করত। অনেক দিন ভয়ে বাড়িও ফেরেনি। বোনের বাড়িতেই ছিল। মাসখানেক আগে বাড়ি ফিরেছিল। কী ভাবে মৃত্যু হল, পুলিশ তদন্ত করুক।’’
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহের অভিযোগ, ‘‘আমাদের কর্মী সহদেবের শরীর ও মুখে কাদা-বালি লেগে ছিল। ভোট পরবর্তী সময়ে তিনি বাড়িছাড়া ছিলেন। তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের মনে হয়। প্রতিবাদে, বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ মিছিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রকৃত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে দাবি করেন তিনি।
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে এই ব্যক্তি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন বলে জেনেছি। বিজেপির হাতে কোনও কাজ না থাকায় কোতুলপুরে দেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে বাঁকুড়ার কেরানিবাজারে রাস্তা অবরোধ করেছে। প্রচারে আসার লোভে জনজীবন ব্যাহত করছে।’’