পুরুলিয়ায় সাজছে সার্কিট হাউস। —নিজস্ব চিত্র।
নদীর চরে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আয়োজনের প্রতিবাদে পথসভা করতে চাইলেও, পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলল একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠন। বাঁকুড়ায় ‘গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটি’ নামে ওই সংগঠনের দাবি, পথসভার জন্য অনুমতি নিতে গেলে, ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। যদিও বাঁকুড়া জেলা পুলিশ তা মানতে চায়নি।
১ জুন বাঁকুড়ায় দলের কর্মিসভা করার কথা রয়েছে মমতার। গন্ধেশ্বরীর চরে তৃণমূল সে সভার আয়োজন করছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে সরব হয়েছে কিছু পরিবেশপ্রেমী সংগঠন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ’। তাদের দাবি, বছর দু’য়েক আগেও গন্ধেশ্বরীর চরে মুখ্যমন্ত্রী সভা নিয়ে তারা আপত্তি তুলেছিল। তখন প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, পরবর্তীতে নদীর চরে আর সভার অনুমতি দেওয়া হবে না। কিন্তু ফের একই জায়গায় সভার আয়োজন করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। একই রকম অভিযোগে ২৮ মে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায় একটি পথসভা করতে তারা উদ্যোগী হয়েছে বলে দাবি ‘গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটি’র।
ওই সংগঠনের অভিযোগ, পথসভার জন্য বৃহস্পতিবার তারা বাঁকুড়া থানায় অনুমতির আবেদন জানাতে যায়। কিন্তু পুলিশ তা জমা না নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সন্তোষ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, পথসভা করতে গেলে পুলিশের অনুমতি দরকার। তাই থানায় আবেদন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আধিকারিকেরা আমাদের আবেদনের বিষয়বস্তু দেখে ফিরিয়ে দেন। তাঁরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে কোনও ভাবেই অন্য কোনও সভা করার অনুমতি দেওয়া হবে না।’’ সংগঠনের সম্পাদক গঙ্গা গোস্বামীর দাবি, ‘‘পথসভা গণতান্ত্রিক অধিকার। নিয়ম মেনে অনুমতি নিতে গেলেও, পুলিশ যে ভাবে আমাদের প্রতিনিধিদের ফিরিয়ে দিয়েছে, তা মানা যায় না। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব যাদের হাতে, তারাই পরিবেশ নষ্ট করছেন। গণতন্ত্র রক্ষা যাদের দায়িত্ব, তারা গণতান্ত্রিক নিয়ম মানছেন না!’’
বাঁকুড়া জেলা পুলিশের কর্তারা কেউ বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি। তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘পথসভার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়নি, এমন কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি।’’ বাঁকুড়া থানার তরফেও অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করা হয়েছে।
এরই মধ্যে, সতীঘাট বাইপাসের গন্ধেশ্বরীর চরের কাছে ওই জমিতে তৃণমূল নেত্রীর সভার তোড়জোড় চলছে পুরোদমে। মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা ও পুলিশের কর্তারা দফায়-দফায় এলাকা পরিদর্শন করেছেন। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, নদীর চরে সভা আয়োজনের অভিযোগ ঠিক নয়। চর লাগোয়া একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে সভা হবে। চরের যাতে ক্ষতি না হয়, সে দিকে নজর রাখার আশ্বাসও দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা।