—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর নামে আজ মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানে বিজেপি সরাসরি যুক্ত নয় বলে দাবি করছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তবে সোমবার, নবান্ন অভিযানের এক দিন আগেই কলকাতা রওনা দিলেন বিজেপির বাঁকুড়া জেলা নেতাদের বড় অংশই।
দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, “ছাত্র-যুবদের এই আন্দোলনে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি যোগ দিতে যাচ্ছি। জেলার কোনও ছাত্রছাত্রী আন্দোলনে গিয়ে সমস্যায় পড়লে তাঁরা আমাকে পাশে পাবেন।”
আরএসএস প্রভাবিত ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া নেতৃত্বের দাবি, ছাত্র সমাজের আহ্বানে নবান্ন অভিযান পুরোদস্তুর অরাজনৈতিক কর্মসূচি। তাই তাঁরা ছাত্র সমাজের কাছে ওই অভিযানে শামিল হতে শুধু আহ্বান জানিয়েছেন। সংগঠিত ভাবে উদ্যোগী হননি।
একটা সময়ে দু’জেলায় টিএমসিপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে উঠে এসেছিল এবিভিপি। কিন্তু গত এক বছর ধরে কলেজগুলিতে এবিভিপি-র সেই ধার-ভার কমেছে। এই অবস্থায় নবান্ন অভিযানে জেলা থেকে কত ছাত্র শামিল হবে, তা নিয়ে কিছুটা ধন্দ রয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত।
সংগঠনের বিভাগীয় প্রমুখ (বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত) রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘‘আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। তাতে বেশি মাত্রায় শামিল ছাত্র সমাজ। মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান সেই সামাজিক আন্দোলনেরই একটা অংশ। কিন্তু তাতে কোন রাজনৈতিক রং নেই। আমরা অতীতে যেমন এবিভিপির কর্মসূচিতে ছাত্রদের সংগঠঠিত ভাবে নিয়ে যেতাম, এ বারে তেমনটা হচ্ছে না। তবে পুরুলিয়া থেকে অনেক ছাত্রই নবান্ন অভিযানে নিজেদের মতো করে যাচ্ছেন। আমরা তাঁদের সাহায্য করছি।’’ যদিও পুরুলিয়ার টিএমসিপি সভাপতি কিরীটী আচার্যের দাবি, ‘‘পুরুলিয়া থেকে এবিভিপির গুটিকয় নেতা ছাড়া সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা কেউই শামিল হচ্ছেন না।’’
বিজেপির একটি সূত্রে দাবি, জেলার সাত-দশ হাজার মানুষ আন্দোলনে যেতে পারেন। বিজেপি নেতাদের পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা সহপাঠীদের নিয়ে চাঁদা তুলে বাস ভাড়া করে সিমলাপাল ও তালড্যাংরা থেকে নবান্নে যাচ্ছেন।সঙ্গে কয়েকজন মণ্ডল কমিটির নেতাও থাকবেন। যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, জেলা থেকে সাতশো লোকও যাবে না।
তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “বিরোধীরা অরাজনৈতিক আন্দোলনের ডাক দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষ প্ররোচনায় পা দেবেন না।”
বাঁকুড়া জেলা পুলিশের একটি সূত্রে দাবি, নবান্ন অভিযানের অনুমতি রাজ্য পুলিশ দেয়নি। তাই কোন এলাকা থেকে কারা ওই আন্দোলনে যাচ্ছেন, প্রতিটি থানার মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “রাজ্য থেকে যেমন নির্দেশ আসবে সে মতো পদক্ষেপ করা হবে। আমরা পরিস্থিতির উপরেনজর রাখছি।”