সাত্তোরের পর ইলামবাজার। ফের নির্যাতনে অভিযুক্ত বীরভূম পুলিশ। এ বারও অভিযুক্তকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ইলামবাজার থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। সাত্তোরের মতো এ ক্ষেত্রেও নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার বিজেপি সমর্থক। গুরুতর আহত ওই মহিলাকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। নির্যাতিতার এক্স-রে এবং ইউএসজি করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
ইলামবাজারের ধরমপুর পঞ্চায়েতের নৃপতিগ্রামের ঘটনা। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই গ্রামেরই এক বিজেপি সমর্থকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ রয়েছে। মাখড়া-কাণ্ডেও তাঁর নাম জড়িয়েছে। ঘটনাটি অবশ্য গত বৃহস্পতিবারের। এখনও এ ব্যাপারে কোথাও লিখিত অভিযোগ হয়নি। রবিবার বোলপুর হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে ওই বধূ অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ ইলামবাজার থানার কিছু পুলিশকর্মী বাড়িতে এসে তাঁর স্বামীর খোঁজ করেন। স্বামী কোথায় রয়েছেন, তা তিনি জানেন না বলায় বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। ওই বধূ বলেন, ‘‘লাঠি দিয়ে মারার পাশাপাশি কোমর আ পেটে লাথিও মারে পুলিশ। আমরা বিজেপি করি। সেটাই আমাদের অপরাধ।’’ তাঁর আরও দাবি, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে তৃণমূল। আজ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে তাঁরা অভিযোগ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
বীরভূমে অবশ্য পুলিশের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। এ বছরই ১৭ জানুয়ারি বোমাবাজিতে অভিযুক্ত পাড়ুই থানার সাত্তোরের এক বিজেপি সমর্থককে খুঁজতে বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে তাঁর কাকিমার বাপের বাড়িতে যায় বীরভূম জেলা পুলিশের এক বিশেষ দল। ওই কর্মীকে না পেয়ে তাঁর কাকিমাকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ও তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী অকথ্য অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। এই নিয়ে তুমুল হইচই শুরু হওয়ায় রাজ্য সরকার সিআইডি-কে তদন্তভার দেয়। মামলায় দু’মাসের মধ্যে চার্জশিট দিয়েও আদালতে ধাক্কা খেয়েছিল সিআইডি।
ইলামাবাজারের ঘটনার কথা জেনে ফের তৃণমূলের হয়ে পুলিশের কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন সাত্তোরের নির্যাতিতা। তিনি বলেন, ‘‘শাসক দলের মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ বেছে বেছে বিজেপি কর্মী এবং তাদের পরিবারকে হেনস্থা আর নির্যাতন করছে। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। আমার ক্ষেত্রেও ইলামবাজার থানার এক অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। কিন্তু, চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ দিয়েছেন তদন্তকারীরা। আমরা তাই উচ্চ আদালতে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছি।’’
জেলার পুলিশ সুপার মুখেশ কুমার যথারীতি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি।