Birbhum Encroachers Eviction

বোলপুরে বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙা হল পর পর দোকান, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও কেন উচ্ছেদ? শুরু বিক্ষোভ

পুরসভার উচ্ছেদ ঘিরে শুক্রবার বোলপুরের চিত্রা মোড়ে অশান্তি হয়েছিল। শনিবার সেখানেই বুলডোজ়ার দিয়ে পর পর একাধিক দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে রামপুরহাটেও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ১০:১৭
Share:

বোলপুর পুরসভা এলাকায় বেআইনি দখলদারদের দোকান ভাঙা হচ্ছে বুলডোজ়ার চালিয়ে। — নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এক মাস বন্ধ থাকবে উচ্ছেদ অভিযান। সরকারি জমি থেকে বেআইনি দখলদারদের সরতে সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, বীরভূমের একাধিক এলাকায় তার পরেও উচ্ছেদ অভিযান থামেনি। শনিবার সকালেই বোলপুরের চিত্রা মোড় এলাকায় ফুটপাথে পর পর দোকান ভেঙে ফেলা হল। বোলপুর পুরসভা বুলডোজ়ার দিয়ে সেই অভিযান চালিয়েছে। যা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে রামপুরহাটেও। শনিবার সকাল থেকে সেখানে পরিবার নিয়ে পথে নেমে আসেন ফুটপাথে বসা ব্যবসায়ীরা। এমনকি, তাঁদের সঙ্গী হতে দেখা গিয়েছে এক তৃণমূল নেতাকেও।

Advertisement

পুরসভার উচ্ছেদ ঘিরে শুক্রবার বোলপুরে অশান্তি হয়েছিল। চিত্রা মোড় এলাকাতেই বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি ছিল, বিকল্প ব্যবস্থা না করে এলাকা থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে সেই জায়গাতেই বুলডোজ়ার চালান পুরসভার আধিকারিকেরা। একের পর এক ফুটপাথের দোকান ভেঙে ফেলা হয়। পুরসভা ওই দোকানিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোকানের বৈধ কাগজ দেখাতে বলেছিল। তা কেউ দেখাতে পারেননি বলে অভিযোগ। তার পরেই দোকান ভাঙার কাজ শুরু হয়।

রামপুরহাট পুরসভা এলাকাতেও উচ্ছেদ অভিযানের ঘোষণা হয়েছে বলে অভিযোগ। তাই শনিবার সকাল থেকে সেখানে পথে নেমেছেন দোকানিরা। সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের স্ত্রী, সন্তান, বাবা, মা সকলেই। দাবি, বুলডোজ়ার তাঁরা কিছুতেই চালাতে দেবেন না। তাই কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় নয়, রুটিরুজি বাঁচাতে সকলে একত্রে পথে নেমেছেন। একই সঙ্গে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরেও কেন পুরসভা থেকে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভে শামিল এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর হঠকারী সিদ্ধান্তে রুজিরুটি বাঁচাতে আমরা সকলে পথে নেমেছি। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন এক মাস সময় দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁরই আধিকারিকেরা এখানে বুলডোজ়ার চালাচ্ছেন। রাত ৯টায় মাইকিং করে পরের দিন ভোরবেলা থেকে দোকান ভাঙা শুরু হয়ে যাচ্ছে। আমরা কার কথা বিশ্বাস করব? মুখ্যমন্ত্রীর কথা? না তাঁর আধিকারিকদের কথা?’’

Advertisement

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় আর এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দল এঁদের সংগঠিত করেনি। সরকারের তুঘলকি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা জাতীয় পতাকা নিয়ে পথে নেমেছি। ভারতের সংবিধান সকলকে ব্যবসা করে খাওয়ার অধিকার দিয়েছে। ২০১৪ সালের আইনে বলা হয়েছে, বিকল্প ব্যবস্থা না করে হকার উচ্ছেদ করা যাবে না। তার পরেও বুলডোজ়ার চলছে। যা আমরা এত দিন উত্তরপ্রদেশে চলতে দেখেছি। রামপুরহাটে বুলডোজ়ার চালানো যাবে না। আমাদের এবং আমাদের পরিবারের লাশের উপর দিয়ে তা চালাতে হবে।’’

উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও রামপুরহাটে বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ করেছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ’ শুক্রবার বুলডোজ়ার নামিয়ে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় সরকারি জমি জবরদখলমুক্ত করার কাজ শুরু করে। প্রথম দফায় রামপুরহাটে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দুই ধারে থাকা অবৈধ অস্থায়ী ও স্থায়ী দখলদারি উচ্ছেদের কাজ সম্পন্নও হয়েছে। উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন ক্রমে জোরদার হচ্ছে বীরভূমে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement