বেপরোয়া: বিষ্ণুপুর চকবাজারের একটি দোকানে বুধবার। ছবি: শুভ্র মিত্র
খোলা মুখেই দোকানে কেনাকাটা করছিলেন বাঁকুড়া পুরসভার সরকারি কর্মী। প্রশ্ন করতেই পকেট থেকে মাস্ক বার করে মুখে পরে বলেন, “বড্ড গরম। পরে থাকতে খুব অস্বস্তি হচ্ছে।” বাঁকুড়া শহরের সুভাষরোডের রেডিমেড পোশাকের যে দোকানে কেনাকাটা করছিলেন তিনি, সেখানে কর্মীরাও মাস্ক পরেননি। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘কয়েক দিন হল পুজোর কেনাকাটার ভিড় বেড়েছে। ভিড় সামলাতে গিয়ে মাঝেমধ্যে মাস্ক পরার কথা খেয়াল থাকছে না।”
পুজো মরসুমে হাটেবাজারে সবাই যাতে মাস্ক পরেন, সে জন্য ট্যাবলো নিয়ে প্রচার করছে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলা। বাঁকুড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, “যে ভাবে মাস্ক ছাড়াই মানুষজন বেরোচ্ছেন, তাতে সত্যিই চিন্তা বাড়ছে। এতে সংক্রমণ প্রবল আকার নেবে। রোগীদের সংখ্যা দুম করে কয়েক গুণ বেড়ে গেলে কোথায় ভর্তি রাখা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’’
শুধু জেলা সদর নয়, বিষ্ণুপুর আর সোনামুখী শহর এবং বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকার ছবিটাও হরেদরে এক। প্রশ্ন উঠছে, মানুষ আদৌ কতটা সচেতন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার আক্ষেপ, “ক্রমেই বেড়ে চলা করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেখেও জেলাবাসীর হুঁশ না ফেরায় অবাক হয়ে যাচ্ছি।’’
বাঁকুড়া শহরের প্রবীণ বাসিন্দা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও গঙ্গা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা মাস্ক পরছি। অথচ, অনেকেই পরছেন না। এমনকি, বহু রেডিমেড পোশাকের দোকানের কর্মীরাও পরছেন না। এই সব দেখে আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাচ্ছে।” বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা বলেন, “আমরা সমস্ত স্তরের ব্যবসায়ীদের মাস্ক পরতে বলেছি। অনেকেই পরছেন। তবে কিছু মানুষ হয়ত সচেতন হচ্ছেন না।”
অনেকেরই দাবি, পুজোর কেনাকাটায় করতে বেরনো মানুষজনকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে পদক্ষেপ করুক প্রশাসন। বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, “বিভিন্ন ভাবে সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরা নিয়ে সচেতন করছি। পুজোর বাজারে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক কী ভাবে করা যায় তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করব।”
জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “প্রত্যেকটি থানাকে এলাকার পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে নির্দেশ দিচ্ছি। মাস্ক বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে দরকারি পদক্ষেপ পুলিশের তরফে করা হবে।”