পুরুলিয়া শহরে মিছিল স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যাদের। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘনেত্রী ও সিএসপি-দের (কমিউনিটি সার্ভিস প্রোভাইডার) বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে সুবিচার চাইতে মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহরে মিছিল করলেন একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা।
বলরামপুর ব্লকের বেলা পঞ্চায়েতের নেওডি, শ্যামনগর, চিতলাঘুটু, ইচাডি, সুরাইডি, দাঁতিয়া, তেতোইটাঁড়, বেলা-সহ বিভিন্ন গ্রামের স্বনির্ভর দলের কয়েকশো সদস্যা জেলা গ্রামোন্নয়ন অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ দেখালেন। পুরুলিয়া জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রকল্প অধিকর্তা সুকুমার বৈদ্য বলেন, ‘‘আমরা তাঁদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগের তদন্ত হবে।’’ অভিযোগকারীরা তা মানতে চাননি।
শ্যামনগর গ্রামের স্বনির্ভর দলের সদস্যা সনকা গোপ, দীপালি গোপ, পবিতা গোপ, নেওডি গ্রামের সরুবালি টুডু, চিতলাঘুটু গ্রামের মাধুরী মাহাতো থেকে ইচাডি গ্রামের উর্মিলা টুডুদের অভিযোগ, ‘‘সঙ্ঘনেত্রীরা নানা ছুতোয় টাকা নিচ্ছেন। কোন কাজে, কত টাকা দিতে হবে, তার মূল্যও নির্ধারণ করা রয়েছে।’’ তাঁদের দাবি, দলগুলির পুননর্বীকরণ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ তুলতে সহায়তা করা প্রভৃতি কাজগুলির জন্য সঙ্ঘনেত্রী বা সিএসপিদের উপর নির্ভর করতে হয়। টাকা ছাড়া তাঁরা কোনও কাজ করতে চান না। কোনও সদস্য ইস্তফা দিলে তাঁর পরিবর্তে অন্য সদস্য আসতে চাইলে সঙ্ঘনেত্রীদের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সে কাজের জন্যও টাকা চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
পাশাপাশি স্বজনপোষণের অভিযোগও রয়েছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দলগুলির উৎকর্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সঙ্ঘনেত্রীরা নিজেদের পছন্দের দল ছাড়া অন্য দলগুলিকে সেই সুযোগ দেন না। তাঁদের আরও অভিযোগ, কমিউনিটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (সিআইএফ) বাবদ প্রাপ্ত ৩১ লক্ষ টাকার হিসেব বারবার চাওয়া সত্ত্বেও দেওয়া হয়নি।
তাঁদের দাবি, গত নভেম্বর থেকে তাঁরা আন্দোলন চালাচ্ছেন। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও অপসারণের দাবিতে তাঁরা ব্লক প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েও ফল পাননি।
বেলা পঞ্চায়েতের তিন জন সঙ্ঘনেত্রী ও কয়েকজন সিএসপি রয়েছেন। চেষ্টা করেও তাঁদের অধিকাংশের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এক সিএসপি বুলুরানি দাসের দাবি, ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। হিসেব সঙ্ঘগুলির বোর্ড অব ডিরেক্টরের সদস্যদের দিয়েছি। গোষ্ঠীগুলিকে তাঁদের কাছ থেকেই হিসেব বুঝে নিতে বলা হয়েছে। কাজের জন্য উপকরণ কিনতে যেটুকু টাকার প্রয়োজন, সেটুই নেওয়া হয়। বাড়তি টাকানেওয়া হয় না।’’
বিডিও (বলরামপুর) শুভাশিস ঘোষ বলেন, ‘‘আমার কাছে তাঁরা অভিযোগ করেননি। খোঁজ নেব।’’