মন্দিরের সামনে। নিজস্ব চিত্র
মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা ঢালাই করা হলেও নেই নিকাশি নালা। বছরভর মন্দিরের দরজার সামনে জল জমা হয়ে শ্যাওলা পড়ছে। এ ছাড়া, নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় রাস্তার দু’পাশে জমছে আবর্জনা। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পুরসভার সাক্ষীগোপালপাড়ায় পুরপরিষেবার হাল এমনই বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, মাঝেমধ্যে নিজেদেরই আবর্জনা বস্তায় ভরে ফেলে আসতে হয়। পুরসভা থেকে প্রশাসনকে জানিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি।
এ বার তাঁরা এলাকায় দেওয়ালে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানালেন। পুরপ্রধান তৃণমূলের শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি এলাকায় গিয়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলব। বাইরে থেকে কেউ ইন্ধন জোগাচ্ছেন কি না, দেখতে হবে। সাক্ষীগোপালপাড়ায় নালা করেও জল বার করা মুশকিল। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি পড়ে যাওয়ায় সমস্যা রয়েছে। জমির মালিকদের সঙ্গে বসে মেটানোর চেষ্টা করছি।”
সাক্ষীগোপালপাড়ায় রাস্তায় এক পাশে ৬ নম্বর, অন্য পাশে ৭ নম্বর ওয়ার্ড। স্থানীয় বাসিন্দা তুলসীদাস মহন্ত বলেন, “নিকাশি নালা নেই, আবর্জনা তুলতে লোক আসে না। এর থেকে গ্রামও ঢের ভাল।’’ ওই এলাকারই বাসিন্দা মধুমিতা সেন, মোহন অধিকারী, সুভাষ মহন্ত, মিঠুন মণ্ডল, শঙ্করচন্দ্র করের মতো অনেকেই দাবি করেন, তাঁরা নিকাশি নালা না থাকার কথা জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও পুরপ্রধানকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘বর্ষার সময় কয়েক শতাব্দী প্রাচীন সাক্ষীগোপাল মন্দির চত্বর নোংরা জলে ডুবে যায়। কিন্তু পুরসভা নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে কিছু করছে বলে চোখে পড়েনি।’’ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অনেক এলাকাবাসী আসন্ন পুরভোটে বুথমুখো হতে চাইবেন না বলেও তাঁদের দাবি।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সিদ্ধেশ্বর ধীবর বলেন, “পুরসভা ওই এলাকায় কাজ করছে না, এ কথা ঠিক নয়। রাস্তা ঢালাই করা হয়েছে। সাক্ষীগোপালপাড়ার অন্য এলাকাতেও নিকাশি নালা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু মন্দির এলাকায় জল বেরনোর উপায় নেই বলে নালা করা যাচ্ছে না।’’ তিনি জানান, নালা হলে যেখানে জল ফেলা হবে, সেই জায়গাটি তুলনায় উঁচু। তা ছাড়া, ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা দিয়ে নালা নিয়ে যাওয়ারও সমস্যা রয়েছে। তবে তাঁদের বুঝিয়ে নালা করা যায় কি না তা দেখা হচ্ছে। সিদ্ধেশ্বরবাবু দাবি, ‘‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকায় সময়মতো আবর্জনা পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। তার উপরে পর্যাপ্ত সাফাই কর্মীও নেই। তবে ওই এলাকার ময়লা সরিয়ে নেওয়া হবে।’’
৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘দেওয়ালে যা লেখা হয়েছে, তা ওয়ার্ডের সমস্ত বাসিন্দার মত নয়। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ গিয়ে উস্কানি দেওয়ায় ওদের দলের কিছু লোকজন সাফাই নিয়ে মাতামাতি করছেন।’’ সাংসদ সৌমিত্রর দাবি, ‘‘বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমি ঘুরছি ঠিকই, উস্কানি দিচ্ছি না। মানুষ নিজেই আমার কাছে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। তৃণমূল এখানে অনুন্নয়নের মডেল তৈরি করেছে। ওদের নিজেদেরই পুরসভা ছেড়ে দেওয়া উচিত।’’