সাফাইয়ে হাত। পুরুলিয়া শহর লাগোয়া শিমূলিয়া কাঁসাই ব্রিজ এলাকায় রবিবার। নিজস্ব চিত্র ।
কেউ পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা। কেউ বা হুড়া বা পাড়া ব্লকের। কেউ আবার থাকেন পুঞ্চা কিংবা মানবাজারে। তাঁরা সকলে এক হয়ে কাঁসাই নদীতে সাফাই অভিযান চালালেন। পুরুলিয়ার বুক চিরে বয়ে যাওয়া কংসাবতী জেলাবাসীর কাছে আদরের কাঁসাই। রবিবার কুড়ুকতোপা সীতারাম মাহাতো স্মৃতি কলেজের জাতীয় সেবা প্রকল্প বিভাগ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে শহর লাগোয়া কাঁসাইয়ের শিমূলিয়া ঘাটে সাফাই অভিযান চলে। এই উদ্যোগে শামিল হয়েছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের তরুণ-তরুণীরা।
অভিযানের সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠনের সদস্য বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়া শহরের সবচেয়ে কাছের পিকনিক স্পট হল নদীর চর। শীতে প্রচুর মানুষ পিকনিক করেন। পৌষ সংক্রান্তির দিন নদীর চরে মেলাও বসে। কয়েকদিন আগে দেখেছিলাম, নদীর চরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রচুর আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে। সেই ছবি সমাজমাধ্যমে তুলে ধরি। তার পরেই বিভিন্ন সংগঠন এই কাজে এগিয়ে আসে।’’
এ বছর কয়েকটি সংগঠন এই কাজে হাত লাগালেও গত কয়েক বছর ধরে নদীর চর থেকে আবর্জনা সংগ্রহের কাজ করে আসছে মানবাজারের কুড়ুকতোপা সীতারাম মাহাতো স্মৃতি কলেজের জাতীয় সেবা প্রকল্প বিভাগ। ওই বিভাগের অনিমেষ মাহাতো বলেন, ‘‘এখানে প্রচুর মানুষ পিকনিক করেন। প্রচুর থার্মোকলের থালা, বাটি, প্লাস্টিকের গ্নাস, প্লাস্টিকের প্যাকেট নদীর চরে পড়ে থাকে। বর্ষা নামলে সে সব আবর্জনা নদীতে মিশবে। জল দূষিত হবে। শুধু পুরুলিয়া শহর নয়, এই নদী তৃষ্ণা নিবারণ করে জেলার বহু মানুষের।’’
সাফাই অভিযানে যোগ দেওয়া পাড়া ব্লকের আনাড়ার বাসিন্দা অর্ণব গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘নদীর চর থেকে প্রচুর প্লাস্টিকের বোতল, মদের বোতল, প্লাস্টিকের গ্লাস, স্ন্যাক্সের খালি প্যাকেট তোলা হয়েছে।’’ বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘আবর্জনা রাখার জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগ নিয়ে গিয়েছিলাম। মোট ৩৬০ ব্যাগ আবর্জনা সংগ্রহ করা গিয়েছে। পুরসভার ডাস্টবিনে ফেলা হয়েছে। আনন্দ করতে আসা লোকজনদের বলব, আবর্জনা ফেলার আগে ভেবে দেখুন।’’ কলেজের জাতীয় সেবা প্রকল্পের সদস্যা রূপালি মাহাতো ও অভিযানে শামিল পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা আত্রেয়ী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই নদীর জলের উপরেই আমাদের নির্ভর করতে হয়। শুধু চরেই নয়, নদীর জলেও আবর্জনা ছিল।’’