প্রার্থনা: নানুরের জুবুটিয়ায় চলছে যজ্ঞ। নিজস্ব চিত্র
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই তাঁর আরোগ্য কামনায় পুজোপাঠ ও প্রার্থনা চলছে। লাভপুরের জুবুটিয়া জপেশ্বর শিবমন্দিরে শুরু হয়েছিল তিন দিন ব্যাপী পুজোপাঠ-সহ মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ। বৃহস্পতিবার সেই যজ্ঞ শেষ হয়। এ দিন থেকেই মিরিটি কিশোর সমিতির পক্ষ থেকে স্থানীয় বেনেপাড়া কালীমন্দিরে শুরু হয়েছে পুজোপাঠ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ১৯৪৯ সালে প্রণববাবুর উদ্যোগেই সমাজসেবা এবং সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য ওই ক্লাব গড়ে ওঠে। রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রণববাবুই ছিলেন ওই ক্লাবের সভাপতি।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে ওই ক্লাবেই প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে প্রণববাবুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ১৩০ জন। সভাপতি প্রণববাবুর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
ক্লাবের প্রাক্তন সম্পাদক প্রিয়রঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘পুজোর সময় ক্লাবেই প্রণববাবুর স্ত্রীর পরিচলানায় গ্রামের মেয়েরা বিভিন্ন নৃত্যনাট্য পরিবেশন করত। প্রণববাবু শেষ পর্যন্ত তা দেখতেন। সমাজ গঠনে কাজ করার জন্য নানা পরামর্শ দিতেন।’’ বর্তমান সম্পাদক রাজেশ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রণববাবু আমাদের ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি। তাই আমরা গর্বিত। তাঁর আরোগ্য কামনায় পুজোপাঠের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
প্রণববাবুর আরোগ্য কামনায় এ দিন থেকে তাঁর মিরিটি গ্রামের বাড়িতেও পুজোপাঠ শুরু করেছেন কুলোপুরোহিত, স্থানীয় ব্রাহ্মণপাড়ার বিপদতারণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বাবা প্রয়াত অনাদিনাথবাবুও ছিলেন প্রণববাবুদের কুলোপুরোহিত। ২৫ বছর দুর্গা-সহ নিত্য নারায়ণ পুজো করছেন বিপদতারণবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘কাকাবাবু নিজে একজন শাস্ত্রোজ্ঞ পণ্ডিত। কিন্তু কখন ঘট ভরতে ঘাটে যাওয়া হবে, কখনই বা সন্ধিপুজো হবে-সহ পুজোর খুঁটিনাটি সব জিজ্ঞেস করতেন। আসলে সবাইকে গুরুত্ব দেওয়ার মানসিকতা থেকেই ওই সব জানতে চাইতেন বলেই মনে হয়। সেই মানুষটার জীবন সঙ্কটের কথা ভাবতেই পারছি না। শোনার পর থেকে ঠাকুরের কাছে আরোগ্য প্রার্থনা করছি।’’
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় অধিকারীও এ দিন সকলের পক্ষ থেকে প্রণববাবুর সুস্থতার প্রার্থনা করে বক্রেশ্বর শিব মন্দিরে পুজো দিলেন, হোমযজ্ঞও হল। সহ সভাপতি চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় একই দিনে পাথরচাপুড়িতে দাতাবাবার মাজারে চাদর চাপান।