কুচকুচে: এমনই অবস্থা হয়েছে নদীর। বোরো গ্রামের কাছে। নিজস্ব িচত্র
টটকো নদীর জল কালো হয়ে যাচ্ছে। জলে দুর্গন্ধ। স্নান করলে হাজারো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। জেরবার মানবাজার ২ ব্লকের বোরো গ্রামের মানুষজন। তাঁদের অভিযোগ, একটি চালকলের বর্জ্য জল এসে মিশছে নদীতে। তার থেকেই এমনটা হচ্ছে। অভিযোগ, প্রশাসন এবং পুলিশকে জানিয়েও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তবে চালকল কর্তৃপক্ষের দাবি, কোনও বর্জ্যই নদীতে মিশছে না।
সম্প্রতি বোরোতে গিয়ে দেখা গেল, নদীর জল কালো হয়ে রয়েছে। পচা গন্ধ আসছে জল থেকে।
বোরো গ্রামের বাসিন্দা দেবাশিস মাহাতো, শেখ মইনউদ্দিনরা বলেন, ‘‘আগেও নোংরা জল ঢুকত। কিন্তু বয়ে যেত বলে তেমন বোঝা যেত না। এখন নদীর জল কমছে। আর নোংরা মিশে কালো কুচকুচে হয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁদের দাবি, গত মাস দুয়েকে সমস্যা মাত্রা ছাড়িয়েছে।
টটকো নদীর জল রোজকার নানা কাজে ব্যবহার করেন বোরোর মানুষজন। বোরোর বাসিন্দা কানাই দত্ত ও ছুটু মাহাতো বলেন, ‘‘আমার সারা বছর নদীর জলেই স্নান করি। কয়েক মাস ধরে গায়ে চাকা চাকা দাগ বেরোচ্ছে। চুলকানি হচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, গবাদি পশুও নদীর জল খায়। সেই প্রাণীগুলিরও অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। নদীর কালো জল গিয়ে পড়ছে একটি রিজার্ভারে। সেখান থেকে সেচের জল যায়। চাষেও তার প্রভাব পড়ছে বলে অভিযোগ কানাই দত্তদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিডিও (মানবাজার ২) তারাশঙ্কর প্রামাণিক বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করছেন, চালকলের তুষ পচা জল মিশেই এমনটা হচ্ছে। বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক তথা চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় জানান, তুষ পচা জল স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে।
তবে চালকল কর্তৃপক্ষের দাবি, আদৌ তুষ পচা জল নদীতে মিশছে না। চালকলটির পক্ষ থেকে নিলয় আগরওয়াল বলেন, ‘‘আমাদের মিলের মধ্যেই তিনটি সোকপিট রয়েছে। সেখানে মাটি বর্জ্য জল শুষে নেয়। নদীতে কিছুই যায় না।’’
এই ব্যাপারে মহকুমাশাসক (মানবাজার) পীযূষকান্তি দাস বলেন, ‘‘খবর নিয়ে দেখছি। ওই এলাকায় তদন্তকারী দল পাঠানো হবে।’’