রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের স্বাস্থ্যকর্মীর পাড়ায় চলছে স্যানিটাইজ় করার কাজ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
জেলার ৯টি কন্টেনমেন্ট জ়োনের কোথাও ঘেরা শুরু হল নির্ধারিত সময়ের চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে। আবার কোথাও মাস্কটুকুও নেই দেখে ফের ঘরমুখো করাল পুলিশ। শুক্রবার ওই এলাকাগুলি ঘুরে দুই বিপরীত ছবি সামনে এল।
আরও একবার নতুন করে কড়া নিয়ন্ত্রণ বিধি বা লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে যে এলাকাগুলিতে, তার মধ্যে রয়েছে রামপুরহাটের কাষ্টগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আখিরাপাড়া। এ দিন সকালে ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেল, অনেকে জানেনই নতুন বিধির কথা। বাসিন্দারা জানালেন, এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়নি। গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বলে ঘিরেও দেওয়া হয়নি। তবে সংবাদমাধ্যমের তৎপরতা শুরু হওয়ায় পরে টনক নড়ে প্রশাসনের। বিডিও (রামপুরহাট ১) দীপান্বিতা বর্মণ বলছেন, ‘‘বিকেলে এলাকা বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত রকম প্রশাসনিক নিয়মও চালু করা হবে।’’
১ জুলাই কাষ্টগড়া এলাকায় ১৩ বছরের এক কিশোরের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। বিএমওএইচ (রামপুরহাট ১) রামানুজ সিংহ জানান, কিশোরের সংস্পর্শে আসা মোট ২০ জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১৮ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আছে। বাকি দু’জনের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। কিশোরটি এ দিন দুপুরে রামপুরহাটের কোভিড হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে। যে এলাকায় করোনা আক্রান্ত হয়েছে, সেই এলাকাতেও সচেতনতার কী হাল তা দেখা গেল এ দিন। বহু জনের মাস্ক নেই। এক জায়গায় দেখা গেল পরিশ্রুত পানীয় জল সংগ্রহ করতে সব বয়সের পুরুষ, মহিলা ভিড় করেছেন। দূরত্ব বিধি বা মাস্কের বালাই নেই সেখানেও। অনেকে আবার নতুন করে এলাকায় লকডাউনের কথা জানেনই না বলে দাবি করলেন।
তবে অন্য ছবি দেখা গিয়েছে নানুরে। বালিগুণী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা থেকে একটু দূরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কন্টেনমেন্ট জোনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ এলাকার পাশ দিয়ে মাস্কবিহীন পথচারীদের মাস্ক পড়তে বাধ্য করাচ্ছেন। তবে এলাকার দোকানপাট খোলা ছিল। গ্রাম লাগোয়া বাসস্ট্যান্ডে লোকজনও ছিল। বিডিও অরূপকুমার মণ্ডল জানান, প্রশাসনিক ভাবে নির্ধারিত নিয়মকানুন বলবৎ করার চেষ্টা করছেন।
নলহাটি ২ ব্লকের বারা ১ পঞ্চায়েতের কন্টেনমেন্ট এলাকা বাঁশ দিয়ে ঘেরা থাকলেও বৃহস্পতিবার বিকেলে এবং শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভিড় দেখা গিয়েছে। এলাকায় মাস্কের ব্যবহার বা দূরত্ব বিধি মেনে চলতে কম দেখা গিয়েছে। পুলিশ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভিড় এড়াতে সচেতন করা হলেও এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা কম দেখা গিয়েছে।
আবার মুরারই ২ ব্লকের আমডোন পঞ্চায়েতে যে ৬ নম্বর সংসদে কন্টেনমেন্ট জোন করা হয়েছে, সেটি ঠিক কোন এলাকা সে সম্বন্ধে এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই জানেন না। এলাকায় বৃহস্পতিবার মাইকিং করা হলেও শুক্রবার এলাকায় বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়নি। ফলে এলাকায় সাধারণ মানুষকে অবাধে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে।