Ambulance

অ্যাম্বুল্যান্সে পাতা দালাল চক্রের ফাঁদ

রোগীর পরিজনদের অসহায়তার সুযোগ নিয়েই দালাল-চক্র জাঁকিয়ে বসেছে রামপুরহাট মেডিক্যালে। অ্যাম্বুল্যান্সেও ফাঁদ পাতে দালাল চক্র। খোঁজ নিল আনন্দবাজারকারও মৃত্যু হলে তার পরেও পরিবারকে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়তে হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

সাইরেন বাজিয়ে ছুটে চলেছে অ্যাম্বুল্যান্স। ভিতরে রামপুরহাট মেডিক্যাল থেকে সদ্য রেফার হওয়া রোগী। এই রেফার হওয়া রোগীদেরই নিশানা করে দালাল চক্র। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরিবর্তে বেশ কিছু রোগীদের বর্ধমান ও কলকাতার নার্সিংহোমে ভর্তি করার জন্য ওই চক্র সক্রিয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

ওই নার্সিংহোমের সঙ্গে রোগীদের সেতু হল অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা। তারাই এই দালাল চক্রের একটা বড় অংশ বলে অভিযোগ। বছর চারেক আগে ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার মলুটি গ্রামের এক রোগীকে রামপুরহাট মেডিক্যাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি না করে ওই চক্র বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করে। নার্সিংহোমের বিল দিতে না পারার জন্য রোগীর বাবা আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পর থেকেই অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের উপর নজরদারি করতে পদক্ষেপ করে প্রশাসন। প্রশাসন থেকে অ্যাম্বুল্যান্স কোথায় যাচ্ছে তা নজরে রাখতে জিপিএস চালু করা হলেও বর্তমানে অধিকাংশ অ্যাম্বুল্যান্সেই জিপিএস কাজ করে না বলে জানাচ্ছেন রোগীর পরিজনেরা। রামপুরহাট মেডিক্যালে প্রিপেড অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের অনেকে জানান, কিছু অ্যাম্বুল্যান্সে জিপিএস যন্ত্র নতুন করে নবীকরণ করা হয়নি। কিছু অ্যাম্বুল্যান্সে আবার জিপিএস যন্ত্র লাগানোই হয়নি। তবে বেশিরভাগ অ্যাম্বুল্যান্সে জিপিএস পদ্ধতি চালু আছে অ্যাম্বুলেন্স মালিকদের দাবি। রোগীদের পরিজনদের অনেকের অবশ্য দাবি, জিপিএস কাজ না করায় দুষ্ট চক্রের পাল্লায় পড়ে দরিদ্র মানুষজন প্রতারিত হচ্ছেন।

কারও মৃত্যু হলে তার পরেও পরিবারকে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি রামপুরহাট মেডিক্যালে এক রোগী মারা যাওয়ার পরে তাঁর পরিজনেরা দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। অভিযোগ, অগ্রিম ভাড়া নিলেও মৃতদেহ বহন করার জন্য উপযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়নি। বড় গাড়ি না দিয়ে ছোট গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বেপাত্তা হয়ে যায় চালক। গাড়ির চালকের মোবাইল বন্ধ থাকায় তার খোঁজও মেলেনি। মৃতের আত্মীয় পরিজনদের নতুন করে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করতে হয়। আগের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার টাকাও ফেরত পায়নি মৃতের আত্মীয় পরিজনেরা। হাসপাতাল চত্বরে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে এই ধরনের প্রতারণা বন্ধ করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও দায়ের করেন মৃতের পরিজনেরা।

Advertisement

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি সুজয় মিস্ত্রি বলেন, ‘‘১০২ নম্বর ডায়াল করে যে অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায় তা কেবলমাত্র রেফার হওয়া মা ও শিশুদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলির জিপিএস পদ্ধতি স্বাস্থ্য ভবন থেকে কার্যকর হয়। বেসরকারী প্রিপেড অ্যাম্বুলেন্সে জিপিএস কাজ করছে কি না তা প্রশাসন দেখভাল করে।’’ প্রিপেড অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া নেওয়া নিয়ে অভিযোগের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও সম্পর্ক নেই বলে তাঁর দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement