বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে আহত শিক্ষিক উত্তমকুমার সাহা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
পড়া না পারায় নবম শ্রেণির কয়েক জন পড়ুয়াকে কান ধরে ক্লাসের বাইরে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক বলে অভিযোগ। সেই পড়ুয়াদের মধ্যে স্কুলের এক পার্শ্বশিক্ষিকার মেয়েও ছিল। মঙ্গলবার স্কুলে আসার পথে ইতিহাসের ওই শিক্ষকের পথ আটকে বাঁশপেটা করার উঠল সেই পার্শ্বশিক্ষিকা ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।
পাড়ুই থানার বাঁধনবগ্রাম গান্ধী বিদ্যাপীঠের ঘটনা। আহত অবস্থায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উত্তমকুমার সাহা নামে ওই শিক্ষক। তাঁর হাতে ও পায়ে চোট গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে এ দিন অভিভাবক ও স্থানীয় গ্রামবাসীরা স্কুল ঘেরাও করে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। ওই পার্শ্বশিক্ষিকা ও তাঁর স্বামীর শাস্তি দাবি করেন। হইহট্টগোল, বিক্ষোভের জেরে স্কুলের পঠনপাঠন শিকেয় ওঠে। পরে পাড়ুই থানা থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিনই স্কুলের তরফে স্কুলের ওই পার্শ্বশিক্ষিকা এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযুক্তেরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) সুরজিৎ কুমার দে বলেন, ‘‘এক শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ পেয়েছি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পার্শ্বশিক্ষিকার স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নিচ্ছিলেন ইতিহাসের শিক্ষক উত্তম। কয়েক জন পড়ুয়া পড়া না-পারায় ক্লাসের বাইরে কান ধরে দাঁড় করিয়ে দেন শিক্ষক। অভিযোগ, তার জেরে এ দিন স্কুল আসার পথে উত্তমকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন ওই দম্পতি। স্থানীয় বাসিন্দা গোপীনাথ পাল, মিহির ঘোষ, প্রশান্ত ঘোষরা বলেন, “পড়ুয়াদের শাসন করার অধিকার শিক্ষকের আছে। ওই শিক্ষককে যে-ভাবে মারধর করা হয়েছে, তার নিন্দা জানাই। ওই পার্শ্বশিক্ষিকা ও তাঁর স্বামীর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম চক্রবর্তী বলেন, “গ্রামবাসীদের কাছ থেকে ঘটনার কথা জেনেছি। পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
যদিও ওই পার্শ্বশিক্ষিকার দাবি, “এই অভিযোগ মিথ্যা। ওই শিক্ষক গাড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। আমরা তাঁকে তুলেছি কেবলমাত্র। তাঁকে মারধর করা হয়নি। উল্টে আমার মেয়েকে ওই শিক্ষক দিনের পর দিন কান ধরিয়ে ক্লাসের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে হেনস্থা করেছেন।”