Mamata Banerjee

‘তুমি কী করেছ’, কুড়মি নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার

পুরুলিয়ার হুটমুড়ার সভাতেও আদিবাসীদের জন্য রাজ্য সরকার নানা কাজ করেছে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া, মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:৩৪
Share:

তালে তালে। নিজস্ব চিত্র

দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট। তার মধ্যে ১ এপ্রিল থেকে দাবি পূরণে জঙ্গলমহল জুড়ে লাগাতার ‘ঘাঘর ঘেরা’-এর ডাক দিয়েছে কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গ। জাতিসত্তার দাবিতে এপ্রিলের শুরুতে পুরুলিয়ায় ‘রেল রোকো’র ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজও। এই আবহে বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহলের দুই জেলায় প্রশাসনিক সভা থেকে কুড়মি সমাজের দাবি পূরণে সরকার সচেষ্ট বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরের সভায় তিনি বলেন, ‘‘সারি ও সারনা ধর্ম নিয়ে আমরা চিঠি লিখেছি কেন্দ্রীয় সরকারকে। আমরা চাই এটা হোক। প্রত্যেকটা জাতিগত মানুষের নিজস্ব সমস্যা আছে। তার সব কিছুই সমাধান করতে হবে।’’

Advertisement

পরে, পুরুলিয়ার হুটমুড়ার সভাতেও আদিবাসীদের জন্য রাজ্য সরকার নানা কাজ করেছে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। আদিবাসী জনজাতি তালিকাভুক্ত করার কুড়মি সম্প্রদায়ের যে মূল দাবি, সেটি সম্পূর্ণ ভাবে কেন্দ্রের এক্তিয়ারে তা সরাসরি উল্লেখ না করেও প্রশ্ন ছোড়েন তিনি। তাঁর দাবি, “বিজেপির কিছু ভাড়া করা লোক আছে, যাঁরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে উস্কায়। আদিবাসীদের বলে এই চাও, ওই চাও। তুমি কী করেছ?” তাঁর সংযোজন, “সারি আর সারনা ধর্ম নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রেখেছি। আমরা মন্ত্রিসভায় পাশ করেছি। কুড়মিদের জন্য কুড়মি অ্যাকাডেমি করেছি। কুড়মিদের ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি।”

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানালেও রেল রোকো থেকে সরতে নারাজ আদিবাসী কুড়মি সমাজ। সংগঠনের মূল মানতা অজিত মাহাতো বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় কুড়মালি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আরও কিছু কাজ করেছেন। তার জন্য ধন্যবাদ।” তবে তাঁর দাবি, ২০১৭-র মে মাসে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে কুড়মি সম্প্রদায়কে আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব পাঠায়। পরে, কেন্দ্রের আদিবাসী মন্ত্রক চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে জানায়, ওই প্রস্তাব তারা মানছেন না। প্রামাণ্য নথি থাকলে তা পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তা পাঠানো হয়েছে কি না, জানা নেই। সঙ্গে, সংশোধিত ‘সিআরআই’ (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-এর রিপোর্টও রাজ্য পাঠিয়েছে কি না, তা নিয়েও তাঁরা অন্ধকারে রয়েছেন।

Advertisement

কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গ-এর রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতোরও বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী অসত্য বিবৃতি আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ১ এপ্রিল থেকে ‘ঘাঘর ঘেরা’ করে জঙ্গলমহল অবরুদ্ধ করে দেব।’’ ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের (বাদল কিস্কু গোষ্ঠী) জেলা পারানিক সূর্যকান্ত মুর্মু বলেন, ‘‘আমরা সারিধরমের কোড দাবি করেছি। আদৌ রাজ্য পদক্ষেপ করেছে কি-না, জানা নেই। মুখ্যমন্ত্রী কেবল কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে দায় এড়াচ্ছেন।’’

বিভাজন না করে সমস্ত আদিবাসীদের মিলিত একটি ধর্মের কোড হওয়া উচিত, মত ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের (নিত্যানন্দ হেমব্রম গোষ্ঠী) পনত পারগানা রবিন টুডুর। তিনি বলেন, ‘‘এক পক্ষ সারি ধরম চায়। আর এক পক্ষ সারনা ধরম চায়। রাজ্য সরকার সারি ও সারনা, দু’টি ধর্মের কোডের জন্যই কেন্দ্রকে বলেছে। তবে মিলিত একটি ধর্মের কোডই হওয়া উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement