তৃণমূলের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে দেবু টুডু ও অভিজিৎ সিংহ। শুক্রবার লাভপুরে। নিজস্ব চিত্র
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যতই শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচন করানোর কথা বলুন না কেন, এ বার কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত দখলের ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র, আদিবাসীসেলের রাজ্য সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন এবং তৃণমূল দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করিয়ে দেবে এটা বলতে পারি।’’ তাঁর এমন বক্তব্যকে বিঁধেছে বিরোধীরা।
শুক্রবার সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে দিদির দূত হয়ে লাভপুরে আসেন দেবু। লাভপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতে এলাকায় ওই কর্মসূচি ছিল তৃণমূলের। দেবুর সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী, পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সালাম শেখ।
গত দু’টি পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে না পারায় লাভপুরে ব্লকের সব ক’টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করে শাসক দল। এ প্রসঙ্গে দেবু বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি প্রার্থী খুঁজে না পেলে আমরা কী করতে পারি? বিজেপি নেতাদের বৌরাই তো দাঁড়াতে চাইছেন না। আমরা তো আর আমাদের বৌদের দাঁড় করিয়ে দিতে পারি না। তবে প্রশাসন এবং তৃণমূল দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করিয়ে দেবে এটা বলতে পারি।’’ যদিও বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই সব কথা বলে যতই প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়া হোক এ বারে আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসক দলকে পঞ্চায়েত জিততে হবে না। মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। এ বার তারা রুখে দাঁড়াবে।’’ তবে অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমরাও চাই সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তা হলে বিরোধীরা নিজেদের অবস্থাটা টের পাবেন। উন্নয়নের নিরিখে মানুষ আমাদেরই বেছে নেবে। আজকের কর্মসূচিতে যে সব দাবি উঠেছে তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা করব।’’
এ দিনের কর্মসূচিতে দেবুর মুখে ঘুরে-ফিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম শোনা গেলেও অনুব্রত মণ্ডলের নাম শোনা যায়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কেষ্টদার নামের দরকার হয় না। তার নাম মানুষের অন্তরে গেঁথে আছে। যাঁরা ভাবছে তাঁর নাম মুছে দেবেন, তাঁরাই মুছে গিয়েছেন।’’
এ দিন ফুল্লরা মন্দিরে পুজো দিয়ে তাঁরা যান যাদবলাল হাই স্কুলে। স্কুল কর্তৃপক্ষ একটি মুক্তমঞ্চ এবং বিনোদনের পার্কের দাবি জানান। লাভপুর গ্রামীণ হাসপাতালে সভাকক্ষ এবং ঝাড়ুদার নিয়োগের দাবি ওঠে। সন্দীপনপাড়ায় রিংকি ধীবর, বুলু থান্দার, মায়া ধীরবেরা তাদের ফুল ছিটিয়ে বরণ করে ঘরের দাবি জানান। পরে তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা ভাঙা ঘরে থাকি। ঘর তৈরির অনুদান পাইনি। তবুও পাওয়ার আশায় বরণ করতে এসেছি।’’ মস্তলীতে এক কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজনের পরে স্থানীয় পার্টি অফিসে কর্মীসভা এবং সিনেমাতলায় পথসভা করা হয়।