প্রতীকী ছবি।
দাবি ছিল, লোকাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু করার। কিন্তু আগামী ১৪ ডিসেম্বর থেকে শুধু হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস শুরুর বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে, হতাশ ও ক্ষুব্ধ বিভিন্ন মহল। সোমবার সন্ধ্যার পরে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সংশ্লিষ্ট জ়োনে পাঁচটি নতুন ট্রেন চালানোর কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে আদ্রা ডিভিশনে রয়েছে পুরুলিয়া থেকে হাওড়াগামী এক্সপ্রেসটিও।
মঙ্গলবার আদ্রার ডিআরএমের সঙ্গে বৈঠক করেন পুরুলিয়ার বিজেপির সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীরা। পরে বিদ্যাসাগরবাবু বলেন, ‘‘লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে ডিআরএমকে বলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সদিচ্ছার অভাবেই সমস্যায় পড়ছে রেল কর্তৃপক্ষ।”
তবে সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার অনুমতি দেওয়ার পরেই দক্ষিণ-পূর্ব রেল সাত জোড়া লোকাল ও কয়েকটি এক্সপ্রেস ট্রেন চালানোর প্রস্তাব পাঠায় রেল বোর্ডে। আপাতত শুধু পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের অনুমতি দিয়েছে রেল বোর্ড। আগামী শুক্রবার আর একটি বিজ্ঞপ্তি বেরোতে পারে। সেখানে লোকাল ট্রেনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারে রেল বোর্ড।
করোনা-পরিস্থিতিতে অন্য অনেক ট্রেনের মতো পুরুলিয়া এক্সপ্রেসকে স্পেশাল ট্রেন হিসেবে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল বোর্ড। ফলে, আগের মতো ট্রেনটি নির্দিষ্ট স্টেশনগুলিতে দাঁড়াবে কি না, ভাড়া আগের মতো থাকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আদ্রার ডিআরএম নবীন কুমার বলেন,‘‘আপাতত ১৪ ডিসেম্বর থেকে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস চালানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেন চালুর বিষয়ে বিশদে জানানো হবে।”
এ দিকে, পুরুলিয়া থেকে হাওড়াগামী একটি এক্সপ্রেস চালুর কথা অবশেষে জানানো হলেও তাতে সন্তুষ্ট নয় রাজনৈতিক দলগুলি থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা। তবে এতে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগে অনেকটাই সুবিধা হবে, তাতে দ্বিমত নেই। বিশেষ করে চিকিৎসা-সহ অন্য জরুরি কাজে কলকাতায় যেতে এত দিনের সমস্যা মিটবে। তবে এর সঙ্গে লোকাল চালুর বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ায় অসম্তোষ কমছে না। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় আদ্রা ডিভিশনে লোকাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন নেট-নাগরিকদের একাংশ।
আদ্রা-খড়গপুর শাখার ‘রেলওয়ে ইউজার্স অর্গানাইজেশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক দেবু চক্রবর্তী, আদ্রা-ভাগা শাখার ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জার ফোরাম’-এর জ়োনাল সম্পাদক তপন মজুমদারেরা বলেন, ‘‘লোকাল ও প্যাসেঞ্জারের উপরেই ভরসা করেন কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী। পুরুলিয়া এক্সপ্রেস চালু হলে কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগে সুবিধা হবে ঠিকই, কিন্তু তাতে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি কমবে না।’’ লোকাল চালু না হলে আখেরে জেলাবাসীর লাভ হবে না, জানান ট্রেন চালুর দাবিতে দিল্লিতে রেলবোর্ডের সামনে ধর্নায় বসা পুরুলিয়ার যুবক তুষার অগস্তিও।
বিষয়টি নিয়ে সিপিএমের পুরুলিয়ার সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘লোকাল চালানোর দাবিতে আমরা আন্দোলনকে আরও তীব্র করব।” পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ও বলেন,‘‘অন্য ডিভিশনে প্যাসেঞ্জার ট্রেন শুরু হয়েছে। কিন্তু কোন যুক্তিতে আদ্রা ডিভিশনে তা হচ্ছে না, সেটা বোধগম্য হচ্ছে না।”