দুর্দশা: এমনই অবস্থা জাতীয় সড়কের। নলহাটির কয়থায়। নিজস্ব চিত্র
আরও একটি প্রাণ কাড়ল বেহাল জাতীয় ৬০ নম্বর সড়ক। বুধবার নলহাটি থানার কয়থার ফতেপুর মোড়ের কাছে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক সাইকেল আরোহীর। মৃতের নাম আলম মোমিন (৬২)। বাড়ি কয়থা বড় মসজিদ পাড়ায়। সকাল ৯টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। জাতীয় সড়কে সাইকেলে যাওয়ার পথে নলহাটির দিকে যাওয়া একটি লরি তাঁকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের গোপালপুর থেকে কয়থা পর্যন্ত রাস্তা। সে জন্য প্রায় প্রত্যেক দিন দুর্ঘটনা ঘটছে। নেই কোনও পিচের আস্তরণও। রাস্তার মধ্যে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। সারা রাস্তা ধুলোয় ঢেকে গিয়েছে। ফলে রাস্তায় বাড়ছে দুর্ঘটনা। সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বেহাল রাস্তার জন্য বেশ কয়েকবার গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধও করেছেন। তাঁদের দাবি, রাস্তা সংস্কার যতদিন না হচ্ছে ততদিন রাস্তায় জল ছিটিয়ে ধুলো ওড়া বন্ধ করতে হবে।
গত ১৫ নভেম্বর রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় সড়ক পথে এই রাস্তার ওপর দিয়ে একটি অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক দিব্যি ভাল, তবে রাজ্য সড়ক খুব খারাপ। সেখানে ঝটকা খেতে হয়।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য জানাচ্ছেন জাতীয় সড়কেই তাঁদের ঝটকা খেতে হয়। কয়থা গ্রামের বাসিন্দা গোলককুমার দাস-সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, ‘‘ভাঙা রাস্তা যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন থেকে। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে অথচ, প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। আজ যিনি মারা গেছেন তিনি এলাকায় পরিচিত মিস্ত্রি ছিলেন। আজকেও সাইকেল নিয়ে কাজে যাচ্ছিলেন। খারাপ রাস্তায় ট্রাক চালক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে। দ্রুত রাস্তা সংস্কার না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
ওই রাস্তার নিত্যযাত্রী, কয়থা হাইস্কুলের শিক্ষক কাজী নুদরত হোসেন বলেন, ‘‘প্রতিদিনের এই রাস্তায় যাতায়াত দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। রাস্তায় যে পরিমাণ ধুলো ওড়ে তাতে এলাকার মানুষের শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।’’
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের মুখ্য নির্বাহী বাস্তুকার নিশিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘রাস্তাটির জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। তবে এই রাস্তা দিয়ে যে পরিমাণ ওভারলোড ট্রাক চলছে তাতে কিছুদিনের মধ্যে রাস্তা ভেঙে যাবে। ওভারলোড নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে ট্রাক মালিক ও চালকদের সচেতন করতে হবে।’’