স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বাড়ির পথে দম্পতি। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
লকডাউনে শুনশান রাস্তা। বন্ধ গাড়ি চলাচল। তাই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ছুটি পেয়ে প্রায় ১০ কিমি হেঁটে বাড়ি ফিরতে হল পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের নান্না গ্রামের এক বৃদ্ধ দম্পতিকে। লকডাউনে রাস্তায় গাড়ি থাকবে না জেনেও কেন ওই বৃদ্ধকে ছুটি দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আবার কারও কারও দাবি, অ্যাম্বুল্যান্সেও বৃদ্ধকে বাড়ি ফেরাতে পারত স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাই বা করা হল না কেন? বান্দোয়ানের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কাজিরাম মুর্মু বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বরে ফোন করলেই পাওয়া যেত। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
বেশ কয়েকদিন আগে জ্বর নিয়ে বান্দোয়ান ব্লকের চিরুডি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ সুধীর মান্ডি। হাসপাতালে তাঁর সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী চান্দমণি মান্ডি। সুস্থ হওয়ায় বৃহস্পতিবার সুধীরবাবুকে ছুটি দেওয়া হয়। সুধীরবাবু বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এ দিনই ছুটি দিল। কিন্তু লকডাউনে কোনও গাড়ি পাইনি। অ্যাম্বুল্যান্সও পেলাম না। তাই দুর্বল শরীরে হেঁটেই ফিরতে হচ্ছে। তারপরে আবার বৃষ্টি পড়ছে। সঙ্গে ছাতাও নেই। খুবই দুর্ভোগে পড়লাম।’’ তিনি জানান, ছেলেদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে বলেছিলেন তিনি। তাঁরা যাননি। নিজের কাছে ফোন না থাকায় ছেলেদের খবরও দিতে পারেননি বৃদ্ধ।
বান্দোয়ানের চিরুডি থেকে নান্না গ্রামে বড় গাড়ি চলাচল বিশেষ করে না। তবে ছোট গাড়ি চলে। এ দিন পথে কোনও গাড়ির দেখা মেলেনি। সুধীরবাবু স্ত্রী চান্দমণিদেবী বলেন, ‘‘দু’জনেরই বয়স হয়েছে। তার উপরে জামা-কাপড় ভর্তি ব্যাগ হাতে ছিল। তাই কিছুটা হেঁটেছি, রাস্তায় দাঁড়িয়ে দম নিয়েছি।, ফের হাঁটছি। কেন যে এ দিনই স্বামীকে ছুটি দিল! স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থেকে গেলেই ভাল হত।’’
চিরুডি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক ডাক্তার বলেন, ‘‘মা ও শিশুদের জন্য বিনামূল্যের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা রয়েছে। কখনও সখনও ফাঁকা থাকলে অন্য রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্সে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়। ওই দম্পতি অ্যাম্বুল্যান্স চাইলে চেষ্টা করা হত। তাঁরা বাড়ি যেতে চাওয়ায় ছুটি দেওয়া হয়েছে।’’