খাতড়া কোর্ট রোডে বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সহ-সভাপতি শ্যামল সরকারের বাড়ি লাগোয়া অফিসে। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি নেতার উপরে হামলা, মারধর ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল খাতড়া শহরে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সহ-সভাপতি শ্যামল সরকারের অভিযোগ ব্লক যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি সুব্রত দে লোকজন নিয়ে এসে তাঁর উপরে হামলা চালিয়েছেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুব্রতবাবু। এসডিপিও (খাতড়া) কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, ‘‘দু’পক্ষের থেকে হামলার লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ তবে সুব্রতবাবুর দাবি, তাঁরা পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি।
শ্যামলবাবুর অভিযোগ, ওই দিন তাঁর খাতড়া কোর্ট রোডের বাড়ির সামনের অফিসে সুব্রতবাবুর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন চড়াও হয়। রড আর লাঠি দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করার চেষ্টা হয়। তিনি বলেন, ‘‘হাত দিয়ে কোনও রকমে লাঠি ধরে ফেলি। পিঠে, পায়ে বেধড়ক মারে। চেয়ার, টেবিল, টিভি আর মনীষীদের ছবি ভাঙচুর করেছে।’’ শ্যামলবাবুর দাবি, সেই সময় পার্টি অফিসে থাকা দলের দুই কর্মী এবং বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা তাঁর দুই ছেলে রুখে দাঁড়ান। পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। খাতড়া হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়।
রবিবার সকালে সুব্রত দে-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শ্যামলবাবু। বেলা ১১টা নাগাদ তাঁর বাড়ি যান বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি যত সরছে, ততই বিজেপির নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা বাড়ছে। মারধর করে, ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের মন ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ রাজ্যের শাসকদলের এই সন্ত্রাসের যোগ্য জবাব দেবে।’’
যাঁর বিরুদ্ধে হামালার অভিযোগ, সেই খাতড়া ব্লক যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি সুব্রত দে বলেন, ‘‘আমি খাতড়া শহরে নেই। বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে আছি। ঘটনাটি বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের ফল হতে পারে। রাজনৈতিক কারণে আমার এবং দলের নাম জড়ানো হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সুব্রত দে নামে অন্য কেউ হতে পারে।’’
খাতড়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আনন্দমোহন মাহাতো বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের উপরে হামলা বা মারধর করা তৃণমূলের সংস্কৃতি নয়। এই ঘটনার সঙ্গে দল জড়িত নয়। থানায় অভিযোগ করার কোনও প্রশ্ন নেই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি যে হেতু আমাদের দলের ও কর্মীদের বিরুদ্ধ অভিযোগ এনেছে, তাই বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। দল বিষয়টির তদন্ত করে দেখছে।’’ ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘কোথাও কোথাও আমাদের সংগঠন দুর্বল বলে এ রকম ঘটনা ঘটছে। কোথাও সংঘর্ষের প্রত্যুত্তর দিচ্ছি না বলে তৃণমূল আমাদের দুর্বল ভাবছে। কিন্তু এটা ঠিক নয়। মানুষের প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। অপ্রিয় ঘটনা ঘটলে তায় দায় ওদেরই নিতে হবে।’’