—প্রতীকী চিত্র।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসনে এক নার্সের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল কাঁকরতলা থানা এলাকার বড়রা গ্রামে। সোমবার সকালের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম স্বাতী গড়াই (মুখোপাধ্যায়)। বছর বত্রিশের ওই নার্সের বাড়ি দুবরাজপুর পুর এলাকায়। তিনি খয়রাশোলের বড়রা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স ছিলেন। হাসপাতালের আবাসনেই থাকতেন।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, অন্য দিন সকালে হাঁটতে বেরোলেও এ দিন উঠছেন না দেখে পাশের আবাসনে থাকা নার্স রীতা হালদার প্রথমে ডাকাডাকি করেন। সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে দেখেন ফ্যানের ব্লেড থেকে ঝুলছেন স্বাতী। তারপরই আশপাশের লোকজন খবর পায়। খবর যায় পুলিশেও। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন একই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজের সুবাদে ওই নার্সের সঙ্গে গ্রামের অনেকের সুসম্পর্ক ছিল। পরোপকারীও ছিলেন স্বাতী।
কিন্তু, স্বাতীদেবী আত্মহত্যা করেছেন, না কি অন্য কিছু, তা নিয়ে ধন্দ কাটেনি। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছেন, এমন অনেকে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, দড়ি ও ওড়না ফ্যানের ব্লেডে ঝুললেও পা মাটিতে ছুঁয়েছিল। আবাসনের পিছনের দরজাও খোলা ছিল। সোমবার লিখিত অভিযোগ না করলেও মৌখিক ভাবে সে সব ঘটনার কথা তুলেছেন মৃতার দাদা সুবীর গড়াইও। তিনি বলছেন, ‘‘আমাদের দৃঢ় ধারণা বোনকে খুন করা হয়েছে। বোনের উপরে জামাই অনেক অত্যাচার করত। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছ’য়েক আগে কাঁকরতলার দীনেশ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল স্বাতীর। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য লেগে ছিল। পরিবারের দাবি, তার জেরেই মাস দু’য়েক আগে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ জুটিয়ে জেলার বাইরে চলে যান। মৃতার দাদা সুবীর গড়াইয়ের দাবি, বোন প্রথমে বিয়ে করবে না এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে যখন সিদ্ধান্ত পাল্টে কার্যত বেকার দীনেশকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আমাদের অমত থাকলেও বোনের কথা মেনে নিই। পরে জানতে পারি দীনেশ আগে একটি ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতারও হয়েছিল।
পুলিশের কাছে পরিজনেরা অভিযোগ করেছেন, বিয়ের পর থেকেই বোনকে মারধর করত দীনেশ। দাদা সুবীরের কথায়, ‘‘ঠিক করেছিলাম বোনকে দিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করাব। কিন্তু এমন পরিণতির জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।’’ বহু চেষ্টা করেও দীনেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। স্ত্রীর মৃত্যুর পরেও তিনি বড়রায় আসেননি।