—প্রতীকী চিত্র।
চলতি শীতে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বেড়েছে রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায়। সমীক্ষা শেষে এমনই দাবি বন দফতরের।
সম্প্রতি মহকুমার কাশীপুর, রঘুনাথপুর ১ ও ২, সাঁতুড়ি, নিতুড়িয়া ব্লকের নানা জলাধার, বড় মাপের পুকুর ও লাগোয়া হুড়া ব্লকের ফুটিয়ারি জলাধারে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে বন দফতর। সঙ্গে ছিল পাখিদের নিয়ে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দফতরের দাবি, সব মিলিয়ে প্রায় হাজার বারোর বেশি পাখি দেখা গিয়েছে। বন দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, সংখ্যাটা অতীতের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় বরাবরই পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা রয়েছে। এ বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বন দফতর জানাচ্ছে, শীতের শুরুতেই পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা শুরু হয় নানা জলাধারে। শীত যত বাড়ে, বাড়তে থাকে পাখির সংখ্যা। শীতের সফর শেষে মোটামুটি ফেব্রুয়ারির শেষ বা মার্চের শুরুতে ফিরে যায় পাখিরা। তবে ভ্রমণ-পর্ব নির্ভর করে শীত কত দিন স্থায়ী হচ্ছে, তার উপরে।
সূত্রের খবর, রঞ্জনডি জলাধারেই পাওয়া গিয়েছে অন্তত হাজার তিনেক পরিযায়ী পাখি। ভাল সংখ্যায় পাখি মিলেছে বান্দা, মৌতোড়, ভাগা বাঁধ, শিমূলিয়া ও সাঁতুড়িতেও। তবে আদ্রার সাহেববাঁধে এ বারে প্রত্যাশিত পাখি আসেনি। একই ছবি পাঞ্চেত, বড়ন্তি বা ফুটিয়ারিতেও। রঘুনাথপুরের রেঞ্জ আধিকারিক নীলাদ্রি সখা জানান, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সামগ্রিক ভাবে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বেড়েছে। তবে যে সমস্ত জলাধার, জলাশয়ে চড়ুইভাতির ভিড় বেশি বা যেখানে নৌকা চলাচল করে, তুলনামূলক কম পাখি মিলেছে।
উদাহরণ হিসাবে ফুটিয়ারির প্রসঙ্গ তুলছে দফতর। এখানে পর্যটনের মরসুমে ভালই নৌকা চলে। তা ছাড়া, শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়ায় পাঞ্চেত জলাধারে পাখির সংখ্যা কম ছিল। বড়ন্তিতেও লোকজনের যাতায়াতে পাখি তুলনায় কম দেখা গিয়েছে। উল্টো দিকে, কিছু নতুন জলাশয় বা জলাধার যেগুলি তুলনায় নিরিবিলি, সেখানে পাখির সংখ্যা ছিল অনেকটাই বেশি।
দফতর জানাচ্ছে, পরিযায়ীরা কোন জলাশয়ে আসবে, তা নির্ধারিত হয় কতকগুলি বিষয়ের উপরে। তার মধ্যে অন্যতম, সেই জলাধারে কচুরিপানা বা অন্য জলজ উদ্ভিদের প্রাচুর্য কতটা। দেখা গিয়েছে, কোনও জলাশয়ের ৩০-৩২ শতাংশ জুড়ে জলজ উদ্ভিদ থাকলে তা পাখিদের পছন্দের জায়গা হয়। পাশাপাশি, জলে দূষণের মাত্রাও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আদ্রার সাহেববাঁধে যেমন দূষণের মাত্রা কিছুটা বেশিই। তার প্রভাব পড়েছে এখানে আসা পরিযায়ীর সংখ্যাতেও।