শান্তিনিকেতনের রাস্তায় মাস্ক ছাড়া পর্যটকের ভিড়। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
উত্তরে হাওয়ায় জানান দিচ্ছে শীত। বোলপুর, তারাপীঠ এখন পর্যটকে ভরা। করোনা কালে জেলার দুই জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের ছবি ঠিক কেমন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার।
অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে ট্রেন চলাচল। তার সঙ্গে শীত পড়তে পর্যটকের চেনা ভিড়ে ফিরছে শান্তিনিকেতন। বেচাকেনা বাড়ায় খুশি ব্য়বসায়ী থেকে হোটেল, রিসর্টের মালিকেরা। ভাবাচ্ছে শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি কিছু পর্যটকের করোনা সচেতনতার বেলায় বেপরোয়া মনোভাব।
উত্তরের হওয়া আর সকালের দিকে হালকা কুয়াশা এখন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে জানান দিচ্ছে শীত। এই সময়ে শুরু হয়ে যায় পর্যটনের সময়। প্রতিবছর বোলপুর, শান্তিনিকেতনে ভিড় জমান পর্যটকেরা। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। করোনা আবহে পুজোর মরসুম থেকেই পর্যটকের দেখা মিলেছে শান্তিনিকেতনে। ভিড় দেখা গিয়েছে বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস চত্বর, সোনাঝুরির হাট সহ কোপাই নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে। হোটেল, রিসর্টগুলিতেও সপ্তাহের অন্য দিন অল্পবিস্তর ভিড় থাকলেও শনি-রবিবার তিল ধারণের জায়গা থাকছে না।
শান্তিনিকেতনের হোটেল ব্যবসায়ী ইন্দ্রজিৎ দাস বৈরাগ্য বলছেন, “এত দিন ব্যবসা খুব খারাপ গিয়েছে। আবারও পর্যটক আসায় মন্দা অনেকটাই কেটেছে।” পর্যটকদের আসায় বেচাকেনাও ভাল হওয়ায় খুশি হস্তশিল্পী থেকে শুরু করে খাবারের দোকানের ব্যবসায়ী থেকে টোটো চালকেরাও। এ সব কিছুর মাঝে চিন্তা বাড়াচ্ছে কিছু মানুষের অসচেতনতা। করোনা সংক্রমণ এখনও চলছে। কিন্তু, এ দিক ও দিক তাকালেই দেখা যাচ্ছে পর্যটক আসছেন তাঁদের অধিকাংশের মাস্ক থাকছে না। মানা হচ্ছে না দূরত্ব বিধির কিছু।
রবিবারও শহরের একাধিক পর্যটন স্থান ঘুরে দেখা গেল সেই বিধিভঙ্গের ছবি। দূরত্ব বিধির তোয়াক্কা না করে এক সঙ্গে জমায়েতের পাশাপাশি সোনাঝুরি হাটেও এ দিন কয়েক হাজার মানুষকে ভিড় জমাতে দেখা যায়। বহু মানুষের ছিল না মাস্ক। শহরের বাসিন্দাদের অনেকের প্রশ্ন, কিছু দিন আগে পর্যন্ত করোনা নিয়ে পুলিশ, প্রশাসনের তৎপরতার পাশাপাশি করোনা পরীক্ষার যে উদ্যোগ ছিল তা কই। ভিড় থেকে সংক্রমণ ছড়ালে তার দায়ভার কে নেবে?
যদিও পুলিশের দাবি, প্রতিদিনই ধরপাকড় চলছে। গত চার দিনে শান্তিনিকেতন ও বোলপুর থানা মিলিয়ে প্রায় ৬০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে করোনা বিধি ভঙ্গের মামলা রুজু করা হয়েছে। কিন্তু, সচেতনতার এই ছবিতে বদল না এলে আবারও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে চিকিৎসকদের। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, “সংক্রমণ এখনও চলে যায়নি এটি সকলকে বুঝতে হবে। না হলে পরিস্থিতি আগের মতো ভয়ানক হতে দেরি হবে না।” মাস্ক নেই কেন? কলকাতা থেকে শান্তিনিকতনে আসা সুমিত্রা ঘোষ, সুনন্দা সেন, পাপিয়া ভট্টাচার্যদের মন্তব্য, “শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। গরমের জন্যেও সব সময় মুখে মাস্ক রাখা যাচ্ছে না। তাই মাঝে মধ্যে খুলতেই হচ্ছে।”