বছর ঘুরতেই আবার অনাস্থা

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের অনাস্থা ঝালদা পুরসভায়! পুরপ্রধানের কুর্সিকে তাই বাসিন্দারা মিউজিক্যাল চেয়ারের সঙ্গেই তুলনা করছেন। বিরোধী কয়েকজন কাউন্সিলরকে টেনে এনে অনাস্থায় গত অক্টোবরে কংগ্রেসকে হটিয়ে পুরসভার ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০২:২৭
Share:

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের অনাস্থা ঝালদা পুরসভায়! পুরপ্রধানের কুর্সিকে তাই বাসিন্দারা মিউজিক্যাল চেয়ারের সঙ্গেই তুলনা করছেন।

Advertisement

বিরোধী কয়েকজন কাউন্সিলরকে টেনে এনে অনাস্থায় গত অক্টোবরে কংগ্রেসকে হটিয়ে পুরসভার ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল। কিন্তু শুক্রবার সিপিএম, ফরওয়ার্ড ও কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের সঙ্গে দলের পুরপ্রধানকে সরাতে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করলেন তৃণমূলেরই কয়েকজন কাউন্সিলর!

গত পুরবোর্ডেও (২০১০-’১৫ সাল) ঝালদার মানুষ দেখেছেন কতবার পুরসভায় অনাস্থা এনে পুরপ্রধান বদল করা হয়েছে। কিন্তু আখেরে যে এই শহরের উন্নয়নই ব্যাহত হয়েছে তা শহরের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষজন জানিয়েছেন। বাসিন্দাদের সেই মনোভাবের আঁচ পেয়ে স্থায়ী বোর্ড ও ঝালদার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৫ সালে নির্বাচনে কংগ্রেস এই পুরসভায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করে। মোট ১২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস একাই সাতটি দখল করেছিল। বাকি পাঁচটির মধ্যে দু’টি ফব, দু’টি সিপিএম ও সিপিএম সমর্থিত নির্দল এবং বাকি আসনটি দখল করে নির্দল। এই ভোটে তৃণমূলের ঝুলিতে কোনও আসন ছিল না।

Advertisement

কংগ্রেসের মধুসূদন কয়াল পুরপ্রধানের চেয়ারে বসেন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ২০১৬-র অগস্টে কংগ্রেসের ৪ জন, ফব-র একজন এবং নির্দল ও বাম সমর্থিত নির্দলের দুই কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূল শূন্য থেকে বেড়ে সাতে পৌঁছয়। অনাস্থা এনে তৃণমূল বোর্ড দখল করে। পুরপ্রধান হন সুরেশ অগ্রবাল। তখনই অবশ্য তৃণমূল কাউন্সিলরদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু বোর্ড বদলের পিছনে সুরেশবাবুর অবদানের কথা ভেবে শীর্ষ নেতৃত্ব সুরেশবাবুর সঙ্গে থাকায় ক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা সে যাত্রায় বিশেষ এগোতে পারেননি।

শুক্রবার ঝালদায় ১৩ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ন’জনই অনাস্থার চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে তৃণমূলের চার জন, কংগ্রেসের তিন জন এবং ফব ও সিপিএমের দু’জন কাউন্সিলর রয়েছেন। উপপুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠক নিজেও রয়েছেন অনাস্থার পক্ষে।

কংগ্রেস কাউন্সিলর মহেন্দ্রকুমার রুংটা বলেন, ‘‘পুরসভা চলছে শুধু পুরপ্রধানের একক ইচ্ছায়। কোনও বৈঠক হচ্ছে না। আমাদেরও তো অনেক কিছু বলার আছে। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তাঁর দলের কাউন্সিলরেরাও রয়েছেন।’’ কাঞ্চন পাঠক ফোন ধরেননি। অনাস্থায় সই করা কাউন্সিলর তথা ঝালদা শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘পুরসভায় কোনও বৈঠক হচ্ছিল না। নানা অভিযোগ উঠছিল। মানুষ কাজ চান। অনাস্থায় তৃণমূলেরই কেউ পুরপ্রধান হবে।’’

পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘দল আমাকে পুরপ্রধানের আসনে বসিয়েছে। অনাস্থার বিষয়টি দলকে জানাব।’’ কিন্তু বৈঠক ডাকা হয় না কেন? সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পুজোর ঠিক আগে আমি দায়িত্ব নিলাম। তারপরেই নোটবন্দির ঘটনা ঘটল। তারপরেও সবাইকে নিয়েই কাজ করছিলাম। কাজ হচ্ছিল কি না পুরবাসী জানেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement