সুনসান পুরভবন। নিজস্ব চিত্র
বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার। এ বার পুরপ্রধান ও এগজ়িকিউটিভ অফিসারের মধ্যে ‘মনোমালিন্য’ শুরু হয়েছে। যার জেরে পুরসভার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগ তুলছেন খোদ পুরপ্রধানই।
পুরসভার খরচ সংক্রান্ত ‘চেক’-এ এতদিন পুরপ্রধান ও পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার সই করতেন। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, পুরপ্রধান আর ‘চেক’-এ সই করতে পারবেন না। আগে পুরপ্রধানের সঙ্গে স্বাক্ষর করতেন এগজ়িকিউটিভ অফিসার। নির্দেশিকায় এখন থেকে এগজ়িকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে পুরসভার ফিনান্স অফিসারকে। এই নির্দেশিকার মধ্যে এগজ়িকিউটিভ অফিসার পুরসভায় নিয়মিত না আসায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফিনান্স অফিসার থাকলেও এগজ়িকিউটিভ অফিসারের অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন প্রকল্পের বেশ কিছু ‘চেক’ পড়ে রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
তৃণমূলের পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের অভিযোগ, ‘‘পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার রাজকুমার চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে অফিসে আসছেন না। মাঝেমধ্যে এলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অফিস থেকে চলে যাচ্ছেন। তিনি ‘চেকে’ সই করছেন না বলে বেশ কিছু কাজ থমকে রয়েছে।’’ প্রদীপবাবুর দাবি, বিষয়টি প্রশাসনের সমস্ত স্তরে জানানোর পাশাপাশি, ওই নির্বাহী আধিকারিকের পরিবর্তে নতুন কোনও আধিকারিককে দায়িত্বে দিতে প্রশাসনকে জানিয়েছেন তিনি।
মুখ খুলতে চাননি ওই এগজ়িকিউটিভ অফিসার। যোগাযোগ করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘যা জানানোর, তা সর্বোচ্চ স্তরে জানিয়েছি। এ নিয়ে বাইরে কিছু বলতে চাই না।’’ তবে প্রশাসনেরই একটি সূত্রের দাবি, পুরপ্রধান বিধি ভেঙে তাঁকে ‘চেকে’ সই করতে চাপ দিচ্ছেন বলে ওই এগজ়িকিউটিভ অফিসার ইতিমধ্যেই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত আকারে অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও সে অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়ে পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘বিধি ভেঙে কাজ করানোর প্রশ্নই ওঠে না। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
এই পরিস্থিতিতে সোমবার ঝালদা পুরসভায় যান মহকুমাশাসক (ঝালদা) সুশান্তকুমার ভক্ত। তিনি বলেন, ‘‘পুরভবনে নির্বাহী অধিকারিককে পাইনি। পুরো বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’’ এই পরিস্থিতিতে গত মাসের বেতন এ বার কবে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন পুরসভার কর্মীরা।