বিষক্রিয়ায় চার কুকুরের মৃত্যুতে রহস্য

মঙ্গলবারের ঘটনাস্থল সিউড়ির চাঁদমারি ময়দানের পুলিশ আবাসন। পুলিশ কর্মীদের পরিবারেরা যেখানে থাকেন সেই আবাসন চত্বর সুরক্ষিতও বটে। চারটি কুকুর ছানার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০০:৩০
Share:

মুখ দিয়ে ঝরছে লালা। নিজস্ব চিত্র

দিনের আলো সবে ফুটেছে। ঘুম ভাঙা সকালে ঘরের দোরে পড়ে থাকা নিঃসাড় চারটি কুকুর ছানাকে দেখে আঁতকে উঠেছিলেন বাসিন্দারা। চুম্বকে মনে পড়িয়ে দিয়েছিল চলতি বছরের গোড়ায় কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতাল চত্বরে ১৬টি কুকুর ছানার মৃত্যুর ঘটনা।

Advertisement

মঙ্গলবারের ঘটনাস্থল সিউড়ির চাঁদমারি ময়দানের পুলিশ আবাসন। পুলিশ কর্মীদের পরিবারেরা যেখানে থাকেন সেই আবাসন চত্বর সুরক্ষিতও বটে। চারটি কুকুর ছানার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। কোনও লিখিত অভিযোগ না হলেও বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়ে দিয়েছেন এই খবর পাওয়ার পরেই। আবাসনের বাসিন্দারা জানান, নীলরতন সরকার হাসপাতালে যেভাবে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছিল এবং দুই মহিলার কুকুর ছানা মারার নৃশংস ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল এখানে তেমন কিছুই এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। প্রথমে দুটি কুকুর ছানা নিস্তেজ হয়ে থাকলেও দেহে প্রাণ ছিল পরে তারা মারা যায় বলে জানান স্থানীয়েরা। এদিকে এই ঘটনার খবর চাউর হতেই সিউড়ির এক পশুপ্রেমী সংস্থার সদস্যরা পুলিশ আবাসন চত্বরে যান। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরাই কুকুর ছানাগুলিকে পশু হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক পরীক্ষার পরেই চিকিৎসক জানিয়ে দেন মারা গিয়েছে কুকুরগুলি। পশু হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই ওই কুকুর ছানাগুলি মারা গিয়েছে।

নীলরতন সরকার হাসপাতালে যেমন কুকুর সহ্য করতে না পারা থেকেই খুন করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছিল এক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে কী না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার পশুপ্রেমীরাও। যে সংস্থাটির সদস্যরা কুকুর ছানাগুলিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল তাঁদেরই একজন সৌরভ টিব্রিওয়াল বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালে একজন ফোন করে জানিয়েছিলেন এই ঘটনা। চাঁদমারি মাঠের পুলিশ আবাসন চত্বরে গিয়ে দেখতে পাই যে দুটি কুকুর ছানা মৃত অবস্থায় পরে আছে। পাশে পড়ে রয়েছে আরও দুটি। তার মধ্যে একটি একটু বড় অন্যটি ছোট। দেখে বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয় না যে তারা অসুস্থ। উদ্ধার করে স্থানীয় পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হল না।’’ পশুপ্রেমী সংস্থার আরেক সদস্য বাপ্পাদিত্য সাহা বলেন, ‘‘আমরা চাই, যে বা যারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের
উপযুক্ত শাস্তি হোক।’’ খোদ জেলা পুলিশ আবাসনের ভিতরে এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল ফেলেছে সিউড়ি শহরজুড়ে। অবলা পশুদের এহেন নির্মম মৃত্যুর প্রকৃত কারণ প্রকাশ্যে আসুক চাইছেন সকলেই।

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘কুকুর মৃত্যুর কথা শুনেছি। ঘটনার তদন্তের জন্য ডিএসপি (ডি এণ্ড টি), আরআই, আইসি-সহ পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে মেরে ফেলার অভিযোগ আদৌ কতটা সত্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement