অঙ্গদ মাহাতো।
ভরা হাটে আনাজ কিনতে গিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর হাতে প্রাণ গেল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের। বুধবার বিকেলে ঝালদা থানার তুলিন হাটবাগানের কাছে, পুরুলিয়া-রাঁচী রাস্তার গা ঘেঁষে তুলিন হাট চত্বরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম অঙ্গদ মাহাতো (৩৩)। বাড়ি তুলিনের কেন্দুয়াডি গ্রামে। তিনি তুলিন ফাঁড়ির অধীনে সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন। বুধবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয়দের একাংশ ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখান। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ তুলিন মাঝপাড়ায় নিহতের দেহ রাস্তায় রেখে পথ অবরোধ হয়।
বৃহস্পতিবার অঙ্গদের স্ত্রী মাধুরী মাহাতো পুলিশের কাছে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। রাত পর্যন্ত পুলিশের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, কেউ ধরা পড়েনি। কী কারণে খুন, সে ব্যাপারেও ধন্দে পুলিশ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
প্রতি বুধ ও শনিবার হাট বসে তুলিনে। মূলত আনাজের হলেও প্রাচীন হাটে জামাকাপড়-সহ অনেক কিছুই বিক্রি হয়। অঙ্গদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার হাটে আনাজ কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাস্থলে থাকা কিছু লোকজনের দাবি, অঙ্গদ যখন আনাজ কেনায় ব্যস্ত সেই সময়ে পিছন থেকে এক জন অঙ্গদের মাথার পিছনে ধারালো কুড়ুল দিয়ে কোপ মারে। সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। কুড়ুলের ধারাল অংশ গেঁথে যায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের মাথায়। সে দৃশ্য কিছু লোক ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে, যা পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
মুহূর্তের মধ্যে হাট জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে দৌড় লাগান। ভিড়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পালায় আততায়ীও। এলাকায় দায়িত্বে থাকা কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার গুরুতর জখম অবস্থায় অঙ্গদকে উদ্ধার করে ঝাড়খণ্ডের মুরির কাছে একটা নার্সিংহোমে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর বুঝতে পেরে পরে তাঁকে রাঁচীর হাসপাতালে স্থানান্তর করা করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অঙ্গদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। অঙ্গদের স্ত্রী বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে আমার স্বামীর শত্রুতা ছিল না। তাই কে বা কারা আমাদের এতবড় সর্বনাশ করল, বুঝতে পারছি না।’’