নিহতের পরিজনের সঙ্গে কথা বলছেন শতাব্দী রায়। নিজস্ব চিত্র
মাড়গ্রামে পঞ্চায়েতের প্রধানের ভাই-সহ দুই তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানালেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। পুলিশ অবশ্য ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সাত জনকে গ্রেফতার করেছে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি মাড়গ্রামের ধূলফেলা মোড় সংলগ্ন হাসপাতালপাড়া এলাকায় বোমার আঘাতে নিউটন শেখ ও লাল্টু শেখ নামে দুই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পরেই পুলিশ এলাকার কংগ্রেস কর্মী সুজাউদ্দিন আহমেদ, তাঁর দুই ছেলে সহ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছিল। রবিবার আরও এক জনকে পুলিশ ধরেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত আনারুল শেখ ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত আইনাল শেখের ভাইপো। যদিও খুনের এফআইআরে তাঁর নাম নেই। পুলিশের দাবি, তদন্তে নেমে ওই যুবকের ঘটনার সঙ্গে যোগসাজশের সূত্র মিলেছে। ঘটনার পর থেকেই আনারুল গ্রামছাড়া ছিলেন। মাড়গ্রামের হাসপাতালপাড়ায় বাড়ি হলেও ওই যুবককে নলহাটি থানার বারশর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশের দাবি। সোমবার ধৃত আনারুলকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হলে তাঁকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়।
এ দিনই সোমবার বেলার দিকে নিহতদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা করেন শতাব্দী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রামপুরহাট ২ ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়, নিহত লাল্টু শেখের দাদা তথা মাড়গ্রাম ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহুবুল আলি ওরফে ভুট্টু, তৃণমূলের মাড়গ্রাম ১ অঞ্চল সভাপতি মেহেদি হাসান এবং অন্য নেতা-কর্মীরা। শতাব্দী রায় মাড়গ্রামে আসছেন জেনে স্থানীয় ধূলফেলা মোড়ে এলাকার বাসিন্দারা ভিড় করেন।
এ দিন সাংসদ প্রথমে যান ধূলফেলা মোড় সংলগ্ন নিউটন শেখের বাড়িতে। নিউটনের স্ত্রী ফেরদৌসি বিবি সাংসদকে স্বামী মারা যাওয়ার পরে পরিবারের অবস্থার কথা জানান। সব শুনে শতাব্দী তাঁদের আশ্বস্ত করেন। সেই সময় ওই বাড়িতে উপস্থিত মাড়গ্রাম ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহুবুল আলি জোড়া খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে বলার বিষয়ে সাংসদের কাছে অনুরোধ জানান। এর পরে মাড়গ্রামের বাগানপাড়ায় লাল্টু শেখের স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন সাংসদ।
পরে শতাব্দী বলেন, ‘‘নিউটনের পনেরো বছরের একটি মেয়ে আছে এবং লাল্টু শেখের স্ত্রী রিনা বিবির তিনটি নাবালিকা কন্যা। নিউটনের মেয়ে ও লাল্টুর স্ত্রীর জন্য যদি কিছু করা যায়, তার জন্য ওঁদের অভিষেকের (বন্দ্যোপাধ্যায়) কাছে পাঠাব।’’ তাঁর আরও দাবি, কারা খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা সকলেই জানেন। তাই দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার দাবি জানাবেন। শতাব্দীর দাবি, ‘‘যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তারা প্রথমে কংগ্রেস করত। পরে একবারের জন্য তৃণমূলে এসেছিল, তার পরে বিজেপিতে গিয়েছিল।’’
এর পরে মাড়গ্রাম থানায় গিয়ে ওসি-র সঙ্গে কথা বলেন সাংসদ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাত জন অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। গ্রামবাসী আইনের প্রতি ভরসা রেখেছেন। পঞ্চায়েত প্রধানও নিশ্চিত করেছেন, যাতে এলাকায় কোনও গণ্ডগোল না-হয়।এ বার পুলিশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করুক।’’ এর পরে এ দিন বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে দুবরাজপুর ব্লকের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন শতাব্দী।