জাল নিয়ে আসছেন বনকর্মীরা, দেখেই পালাল হনুমান। বুধবার রামপুরহাটের গাঁধী ময়দানে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
তিন দিন পরে রামপুরহাট শহরে ফের ফিরল সেই হনুমান। ফিরল স্বমহিমাতেই। বুধবার সকাল থেকেই হনুমান ধরতে তৎপর হন বনকর্মীরা। কিন্তু দিনভর বাগে আনা যায়নি তাকে। খেলার মাঠ, পার্ক, পুরসভার দেওয়ালে, স্কুলের সামনে, কোর্ট চত্বরে ঘুরেছে সে।
এ দিন সকালে রামপুরহাট পুরসভার দেওয়ালে হনুমানটিকে বসে থাকতে দেখেন পথচারীরা। খবর যায় বন দফতরের কাছে। চুপ করে বসেছিল সেটি। বন দফতর সূত্রে খবর, তার মাথায় সামান্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে কেউ যেন বিরক্ত না করেন, সে দিকে নজর দেন পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি। কিন্তু সেখানে কয়েক দিনের ‘পরিচিত’ বনকর্মীদের দেখেই গাছে উঠে পড়ে হনুমানটি। কিছুক্ষণ পরে গাছ থেকে নেমে ছুটে চলে যায় গাঁধী ময়দানে। তার পিছনে ছুটতে থাকে এক দল পথকুকুরও। বনকর্মীরাও পৌঁছন গাঁধী ময়দানে। স্টেডিয়ামের সিঁড়ি থেকে গুটি গুটি পায়ে নেমে বনকর্মীদের হাতের নাগালে এসে বসে। তার পরে তাঁদের উপর দিয়ে ঝাঁপিয়ে উঠে যায় স্টেডিয়ামের অনেক উপরে। বার কয়েক একই কায়দায় বনকর্মীদের কাছাকাছি গিয়েছে সেটি। কিন্তু ধরতে গেলেই পগারপার।
রেঞ্জার সুষেণ কর্মকার বলেন, ‘‘দফতরের কর্মীদের হাতে জাল, বস্তা দেখেও সামনে এসে বসছে। তার পরে কর্মীদের উপর হামলা করেই পালাচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। যতক্ষণ ধরা না যাচ্ছে, এ ভাবেই চেষ্টা চলবে।’’ এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, ‘‘হনুমান বা বাঁদরকে ধরতে ঘুমপাড়ানি বুলেট ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। তাই অনুমতির অপেক্ষা করা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, সরস্বতী পুজোর দিনও বেলা ১১টা নাগাদ রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে কিছুক্ষণের জন্য এসে বসেছিল ওই হনুমান। এক ফুচকা বিক্রতার কাছ থেকে একটি সেদ্ধ আলু নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। পরে তার হামলায় এক ব্যক্তি জখম হয়েছিল। সে দিন বিকেলের দিকে বগটুই মোড়ে বনকর্মীদের সঙ্গে কার্যত ‘লুকোচুরি’ চলে তার। সোমবার জয়কৃষ্ণপুর এলাকায় তাকে দেখা গেলেও বনকর্মীদের দেখে দখলবাটি এলাকার দিকে চলে যায় হনুমানটি। মঙ্গলবার তাকে রামপুরহাট এলাকায় দেখা যায়নি।
এ দিকে হনুমানের আক্রমণে রামপুরহাটের অনেকে জখন হয়েছেন। অভিযোগ, আক্রান্তেরা রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যানসিন পাচ্ছিলেন না। বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছিল। হাসপাতাল সুপার শর্মিলা মৌলিক জানান, ‘‘হাসপাতালকে ওই ওষুধ নিজেদেরই কিনতে হচ্ছে। কিছুটা কেনাও হয়েছে। পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের তা দেওয়া হবে। ব্লকের বাসিন্দারা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ওই ভ্যাকসিন পেতে পারেন।’’