বাছাই: আমোদপুর স্টেশনে পদ্ম পাঠানোর ব্যস্ততা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
দেরি নেই পুজোর। চার দিকে সাজ সাজ রব। চলছে পুজোর প্যান্ডেলের কাজ। কুমোরবাড়িতেও জোর কদমে চলছে প্রতিমা বানানো। এখন শুরু হয়েছে পদ্মফুল তুলে দুর্গাপুজোর জন্য স্টোরে পৌঁছনো। মহম্মদবাজারের ফুল ব্যবসায়ীরা ভোর থেকেই পুকুরে গিয়ে ফুল তুলছেন। পরে তা পৌঁছে যাচ্ছে স্টোরে। যাতে পুজোর সময় স্টোর থেকে সেই ফুল পৌঁছে যেতে পারে বিভিন্ন জায়গায়।
মহম্মদবাজার ব্লকের শালদহ গ্রামে পদ্মফুল ব্যবসায়ী উত্তম অঙ্কুর, সুনীল বাগদি জানালেন, লাভ কম। তবুও পৌঁছতে হচ্ছে ফুল। ছ’বছর ধরে ফুল চাষ করে আসছেন। সব মিলিয়ে ১৩টি পুকুরে পদ্মফুলের চাষ করেন। শালদহা, সেহেড়াকুড়ি, লোহাবাজার ছাড়াও ঝাড়খণ্ডের কয়েক’টি পুকুরে পদ্মফুলের চাষ করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘এখন ফুলের দাম কম। তবুও যতটুকু আয় হয়, সেই আশায় সকাল থেকে ফুল তুলতে শুরু করি। তার পরে সেই ফুল পৌঁছে দিই গুসকরার স্টোরে। সেখানেই সমস্ত জায়গার ফুল একত্র করা হয়।’’
শ্রাবণ মাসের শেষ থেকেই শুরু হয়ে যায় পদ্মফুল তোলার কাজ। এখন ফুলের দাম কিছু কম। তবুও প্রতিদিন সব পুকুর মিলিয়ে হাজার, বারোশো ফুল নিয়ে যান স্টোরে। পুজোর সময় যে ফুলের দাম ৫ টাকা হয়, তার দাম এখন সেই ফুলের দাম প্রতিপিস ১ টাকা। ফুল তোলা এবং তা স্টোরে পৌঁছে দেওয়ার পরে যে টাকা মেলে তার থেকে খরচ হয়ে যায় অর্ধেকের বেশি। এর উপরে পুকুর মালিকদের টাকা দিতে হয়। বাকি সময় ইটভাটায় কাজ করেন তাঁরা। যেহেতু এখন ইটভাটার কাজ বন্ধ। তাই এই সময়টা পদ্মফুল চাষের কাজেই ব্যস্ত থাকেন তাঁরা। এখন ফুলের যা দাম তাতে খুব বেশি আয় হয় না।
শুধু মহম্মদবাজার নয়, পাশাপাশি সিউড়ির দুটি ব্লক, দুবরাজপুর, লাভপুর এবং সাঁইথিয়াতেও চাষ করা হয় পদ্মফুলের। রামপুরহাটের সাহাপুর, কড়কড়ি গ্রামেও অল্প হলেও পদ্মফুলের চাষ হয়। তুলনামূলক ভাবে বেশি পদ্মফুলের চাষ হয় আমোদপুর এলাকায়। এ বছর বৃষ্টি লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অনেকটাই কম হয়েছে। পুকুরে জলের অভাবে অনেক জায়গাতেই
পদ্মফুলের গাছ শুকিয়ে গেছে। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, চাষও অন্য বছরের তুলনায় অনেকটা কম। অনেক চাষির আবার আশা, ‘‘চাষ কম হয়েছে বলেই হয়তো ফুলের দাম বাড়বে। দেখা যাক, কী হয়।’’